ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারকে চিকিৎসকরা সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করে থাকেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. লুবনা মরিয়ম।
প্রথম হচ্ছে- জেনারেল ক্যাটাগরি যাদের কোনো রিস্ক নাই।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে- বিআরসিআরওয়ান জিন মিউট্রেশন আছে। যে মিউট্রেশন যদি মায়ের বা প্রথম ব্লাডের কারও পজিটিভ থাকে, তাহলে এটা জিনগত মানে ক্রমাগত বংশ পরম্পরায় এই জিন মেয়েরও বহমান হতে পারে। সুতরাং এটাকে বলে হ্যারিডিটেরি ক্যান্সার।
তৃতীয়টি হচ্ছে- অ্যাভারেজ গ্রুপ ক্যান্সার। যাদের ফ্যামিলি বা তার জিনের মধ্যে কোনো মিউট্রেশন নাই তাদেরকে বলা হয় অ্যাভারেজ রিস্ক গ্রুপ।
কয়েকটি প্রাথমিক কথা যা সব ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও তাই। সেটা হলো-
১. মহিলা হওয়া মাত্রই তার ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে। সেটা যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে, বয়স একটা ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্টর।
২. বয়স যখন বাড়তে থাকে তখন এই ঝুঁকিটা বেড়ে যায়। এই জন্য যখন বয়স বাড়তে থাকে, তখন স্প্রিংয়ের কথা বলা হয়। কম বয়সে কিন্তু স্প্রিংয়ের কথা খুব বলা হয় না।
এখন যেসব রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো আমরা কন্ট্রোল করতে পারি সেগুলো হলো-
১. অতিরিক্ত ওজন। আমরা যদি আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে অনেকখানি রিস্ক কমে যাবে। এটা শুধু ব্রেস্ট ক্যান্সার নয়, আরও অনেক ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।
২. দ্বিতীয়ত কিছু ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি করা। যদি ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভটি করা যায় তাহলে ওজনও কমবে, সঙ্গে রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো কন্ট্রোলে থাকবে।
৩. হেলদি ফুড। হেলদি খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যে এত ক্যান্সারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, এর মূল কারণ আমাদের খাদ্যাভ্যাস। দেখা যায়, শাক-সবজি কম খাচ্ছি, ফলমুল কম খাচ্ছি। এখনকার বাচ্চারা আরও বেশি কম খায়। ফলে একটা বড় রিস্ক ফ্যাক্টর তৈরি হয়।
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টার আছে, যেটা হচ্ছে হরমোন। অনেক সময় নারীরা বাচ্চা নিতে পিল খেয়ে থাকে, পিল ঠিক আছে। কিন্তু সেটা ৫ বছরের বেশি যেন না খাওয়া হয়। তাহলে শরীরের মধ্যে একটা চেঞ্জ আসতে পারে। অনেক নারীর মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে অনেক সাইডইফেক্ট হতে পারে। যেমন- মাথা গরম হয়ে যায়, খুব অস্থির লাগে।
এ সময় ডাক্তাররা কিছু হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দেয়। আরেক বিষয় হচ্ছে ব্রেস্ট ফিডিং। যেসকল মায়েরা ব্রেস্ট ফিডিং করিয়েছেন, তাদের রিস্ক ফ্যাক্টরটা কম থাকে।
এজন্যই সাধারণত চিকিৎসকরা বলে থাকেন, বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করানো এবং এই পিলগুলো এতবেশি না খাওয়া বা লং টাইম না খাওয়া। নিজের স্বাস্থ্যটাকে কন্ট্রোল করা বা অতিরিক্ত ওজন কন্ট্রোল করা। সকল নারীকে অবশ্যই হেলদি লাইফস্টাইল পরিচালনা করতে হবে।