করোনা থেকে বাঁচতে ডা. এবিএম আবদুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২০, ০২:৫৪ পিএম
![করোনা থেকে বাঁচতে ডা. এবিএম আবদুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2020/03/09/image-287142-1583744372.jpg)
ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সতর্কতামূলক বার্তার পাশাপাশি বেশ কিছু ভুল তথ্যও চলে যাচ্ছে মানুষের কাছে। তদুপরি বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই করোনা আতঙ্কে ভুগছেন।
এমতাবস্থায় করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকার উপায় এবং প্রতিরোধ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। কারণ এই রোগে মৃত্যুহার খুব বেশি নয়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, করোনায় মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। সুতরাং এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমাদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সেগুলো যথাযথভাবে মেনে চললেই এ ভাইরাসের সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হবে।
করোনার লক্ষণ
জ্বর দিয়ে করোনাভাইরাসের লক্ষণ শুরু হয়। জ্বরের সঙ্গে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা থাকতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
আক্রান্ত কাউকে পাওয়া গেলে প্রথমেই তাকে অন্যূন দুই সপ্তাহ আলাদা করে রাখতে হবে, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যদের সংস্পর্শে না যেতে পারে। একই সঙ্গে যারা আক্রান্ত হননি, তাদের চলাফেরায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে। তবে মানুষের দেহে ভাইরাসটি সংক্রমণের পর এক থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো, তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে ওঠেন। কিন্তু কিডনি, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্র কিংবা ফুসফুসের পুরনো রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
একই সঙ্গে এটি নিউমোনিয়া, রেসপিরেটরি ফেইলিউর অথবা কিডনি অকার্যকারিতার দিকে মোড় নিতে পারে। এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুও ঘটতে পারে।
প্রতিরোধে যা করবেন
যে কোনো ভাইরাস প্রতিরোধে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ জন্য ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার, গণপরিবহন এড়িয়ে চলা, প্রচুর ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
বাইরে থেকে ঘরে ফিরে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। তার পর অন্য কিছু ধরবেন। কারণ এই হাত দিয়ে যা কিছু ধরা হবে, সেখানেই ভাইরাস থেকে যেতে পারে। টেবিল, চেয়ার, দরজার হাতল, কিবোর্ডে ভাইরাস থেকে যেতে পারে। সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই এগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।
কিছু খাওয়া কিংবা রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে, ডিম কিংবা মাংস রান্না করার আগে ভালোভাবে সিদ্ধ করে, ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলা, নিয়মিত ঘর এবং কাজের জায়গা পরিষ্কার রাখা এবং অপ্রয়োজনে ঘরের দরজা-জানালা খুলে রাখা যাবে না।
জনসমাগম এড়িয়ে চলবেন। তা হলেই অনেকটা নিরাপদ থাকা যাবে। তাই কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে পরামর্শ থাকবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া।
ওপরে উল্লিখিত প্রাথমিক লক্ষণগুলো কারও শরীরে দেখা দিলে হটলাইনে ফোন করতে হবে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) চালু করা হটলাইন নম্বরগুলো হচ্ছে- ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫। এখানে ফোন করলে বাসা থেকে এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে।