
প্রিন্ট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১০ এএম
গর্ভবতীদের রোজার খাবার

আনিকা নওরিন
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
গর্ভবতী মায়ের জন্য রমজান মাসে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মা এবং শিশুর সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
* সেহরি
সেহরি সঠিকভাবে খাওয়ার মাধ্যমে পুরো দিন ধরে শক্তি বজায় রাখা সম্ভব। সেহরিতে যে ধরনের খাবার খেতে হবে, তা হলো-
▶ কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট : সেহরিতে এমন খাবার নির্বাচন করুন, যেগুলো ধীরে ধীরে শক্তি ছাড়ে। যেমন : গমের রুটি, ব্রাউন রাইস, ওটমিল, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
▶ প্রোটিন : প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এর মধ্যে ডিম, ডাল, মাংস, মাছ, মটরশুঁটি, বা দই অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
▶ ফাইবার : খাবারের মধ্যে ফাইবার থাকা জরুরি। সেহরিতে ফল যেমন কলা, আপেল এবং শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রকলি রাখা ভালো।
▶ হাইড্রেশন : সেহরির পরে পরিমাণমতো পানি পান করা উচিত, তবে অতিরিক্ত পানি না খাওয়া ভালো।
* ইফতার
ইফতারের খাবারগুলো সুষম এবং পুষ্টিকর হওয়া উচিত।
▶ ডেটস ও পানি : ইফতার শুরু করার জন্য কয়েকটি ডেটস এবং পানি খাওয়া সেরা।
▶ প্রোটিন : সেহরির মতো ইফতারেও প্রোটিন থাকা উচিত। এটি মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদির মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে।
▶ ফলমূল : ইফতারের কিছু সময় পর তাজা ফল যেমন আপেল, কলা, পেঁপে, তরমুজ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
▶ হালকা স্যুপ : ইফতারের শুরুতে একটি হালকা স্যুপ যেমন মুরগির স্যুপ, ডাল স্যুপ খাওয়া উপকারী হতে পারে।
▶ ফ্যাট ও চিনি পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ : অতিরিক্ত তেল, মাখন বা মিষ্টি খাবার (যেমন জিলাপি, লাড্ডু) খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
* পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প
▶ মাছ ও মাংস : মাছ এবং মাংস গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্যালমন, টুনা, হালকা মাংস (মুরগি, ভেড়ার মাংস) শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতিতে সাহায্য করে।
▶ ডাল ও সয়াবিন : গর্ভবতী মায়ের জন্য ডাল এবং সয়াবিন পুষ্টির আদর্শ উৎস।
▶ দই : দই খাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী।
▶ তেল ও বাদাম : তেল (বিশেষত অলিভ অয়েল) এবং বাদাম (যেমন আখরোট, কাজু, পেস্তা) ভালো ফ্যাটের উৎস।
* বিশেষ পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা
গর্ভাবস্থায় বিশেষ কিছু পুষ্টির প্রয়োজন রয়েছে যা সন্তানের বিকাশ এবং মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
▶ ফোলেট : ডাল, শাকসবজি, আটা, শস্য এবং কমলা ফলের মধ্যে ফোলেট রয়েছে।
▶ আয়রন : লাল মাংস, পালংশাক, ডাল, ড্রাই ফ্রুটস এবং সয়াবিন আয়রনের ভালো উৎস।
▶ ক্যালসিয়াম : দই, দুধ, পনির, শাকসবজি, বাদাম ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
▶ ভিটামিন ডি : সূর্যালোক এবং ফ্যাটি মাছ (যেমন স্যামন) থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
লেখক : মেডিহেল্প, ফার্টিলিটি সেন্টার, গ্রীন রোড, ঢাকা।
সতর্কতা
পুরো দিনটায় পানি পান করতে হবে, তবে রোজার সময় তা অনেক সীমিত। সেহরি এবং ইফতারের মাঝে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
ইফতার ও সেহরির মধ্যে অতিরিক্ত স্ন্যাকস খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। এগুলো শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করতে পারে যা স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। চা বা কফি খাওয়া কমিয়ে দিন, কারণ ক্যাফেইন শরীরে ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে।