ধূমপানকারীদের ফুসফুসে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। কারও ফুসফুসে ক্যানসার হলেই আমরা ধরে নিই— তিনি ধূমপায়ী ছিলেন। কিন্তু তা নয়; ধূমপান না করেও ফুসফুসে ক্যানসার হতে পারে।
আধুনিক জীবনযাত্রা, অনিয়ম ও অতিরিক্ত দূষণের ফলে আমাদের চারপাশে যেসব অসুখের প্রকোপ সবচেয়ে বেড়েছে, তার মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। দেশে যেসব ক্যানসারের প্রবণতা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার অন্যতম। মূলত ধূমপায়ীদেরই ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারও ফুসফুসে ক্যানসার হলেই আমরা ধরে নিই— তিনি ধূমপায়ী ছিলেন, এটি ঠিক নয়। তবে ধূমপান না করলেও যে ফুসফুসে ক্যানসার জন্ম নেয়।
এই রোগের মূল হচ্ছে—নিকোটিনসহ তামাকে থাকা অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান, তাই নিজে ধূমপান না করলেও চারপাশের ধূমপানের ধোঁয়া থেকেও দূরে থাকা জরুরি। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধোঁয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। তাই তাদেরও পরোক্ষ ধূমপান থেকে দূরে রাখতে হবে। এক টানে যতটা নিকোটিন পৌঁছায়, তা ফুসফুসের ওপর নিকোটিনের আস্তরণ তৈরি করে।
চিকিৎসকদের মতে, ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান সমস্যা, এটি ধরা পড়ে খুব দেরিতে। এই রোগের কিছু প্রাথমিক উপসর্গ থাকে। লক্ষণগুলো সাধারণ ভেবে অনেকেই অবহেলা করে থাকি। জেনে নিন ফুসফুসে ক্যানসারের ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে কোন উপসর্গগুলো বিপদের কারণ হতে পারে।
১. দীর্ঘ দিনের কাশি উপেক্ষা করা মোটেই ঠিক নয়। কাশি শুরু হয়েছে, কিছুতেই কমছে না, লাগাতার বেড়েই চলছে। এটি দ্রুত নিরাময় করা উচিত।
২. কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
৩. বুকব্যথা। বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ হওয়া ক্যানসারের লক্ষণ।
৪. মাঝেমাঝেই ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হওয়া। আবার হালকা শ্বাসকষ্ট ক্যানসারের উপসর্গ।
৫. মাথার যন্ত্রণা ক্যানসারের লক্ষণ।
৬. কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া। খিদে কমে যাওয়া। খাবার গিলে খেতে অসুবিধা হওয়াও ক্যানসারের উপসর্গ।
৭. গলা ধরে যাওয়া বা গলার স্বর বদলে যাওয়া।
৮. পাঁজরের হাড়ে যন্ত্রণা।
সাধারণত এ উপসর্গগুলো বেশিরভাগ মানুষই পাত্তা দেন না। ধূমপায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে যখনই দু’-একটি উপসর্গ দেখা যাবে, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শে একটি চেস্ট এক্সরে করিয়ে নেওয়া উচিত। প্রয়োজন অনুযায়ী সিটিস্ক্যান, এফএনএসি বা বায়োপসি করাতে হবে।
বি.দ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।