সকালে ঘুম থেকে উঠেই পায়ের আঙুলে ব্যথা বা হাতের আঙুল ভাঁজ করতে না পারা, হাত বা পায়ের অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে থাকা যে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ- এ কথা অনেকেই জানেন। কারণ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা এখন জীবনধারা-নির্ভর রোগের মধ্যে পড়ে।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি নিয়ে অনেকেই দুঃশ্চিন্তায় থাকেন। ইউরিক অ্যাসিড কী, কেন বাড়ে, ভবিষ্যতে কী জটিলতা তৈরি করতে পারে কিংবা করণীয় কী সেই সম্পর্কে জানেন কি?
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে কী করবেন তা নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন ভারতীয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্র। তিনি জানান, ইউরিক অ্যাসিডের মতো সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে কয়েকটি বদল আনতে হবে। যেমন-
পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন: ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস, সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি, বিনসের মতো খাবারের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পান: ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বাড়াতে হবে। শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। এ কারণে দিনে অন্ততপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করুন। তবে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকলে হঠাৎ করে পানি পানের পরিমাণ বাড়াবেন না। এতে বিপদ বাড়তে পারে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান: গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি-এর উপস্থিতি থাকলে ইউরিক অ্যাসিড অনেকটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যেকোনো ধরনের লেবু রাখুন। তবে লেবু খেতে পছন্দ না করলে খাদ্য তালিকায় পেয়ারা, আপেলের মতো ফল রাখতে পারেন। কারণ এসব ফলেও পর্যাপ্ত ভিটামিন সি রয়েছে।
ওজন কমান: ওজন বেশি থাকলেই ইউরিক অ্যাসিডের মতো একাধিক সমস্যা বাড়ার আশঙ্কা বাড়ে। এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। সেই সঙ্গে ডায়েট থেকে তেলযুক্ত যেকোনো ফাস্টফুড খাবার বাদ দিন। এর পরিবর্তে শাক, সবজি, ফল রাখুন।
আশিস মিত্র বলেন, ইউরিক অ্যাসিডের কারণে কিডনিতে পাথর হলে বা গাঁটে গাঁটে ব্যথা হলে নিয়মিত ওষুধ খেতেই হবে। এছাড়াও যাদের কিডনির অসুখ রয়েছে, তাদের ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে প্রথম থেকেই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মেনে চলতে হবে সঠিক ডায়েট। এতে সহজে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।