বাংলাদেশের পরিস্থিতি যেন দিন দিন চলে যাচ্ছে হাতের বাইরে, যা নিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই বাংলার বিনোদন জগতের তারকারা। সোমবার ছাত্র আন্দোলনের কারণে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেনাবাহিনীর হাতে চলে যায় দেশ। তাতে অবশ্য শান্ত হওয়ার নাম নেই দেশ। গত কয়েক দিন ধরে ঢাকায় শুরু হয়েছে ডাকাতি। আর ডাকাত ঠেকাতে একত্র হয়ে ছাত্র-জনতা পাহারা দিচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ ঢালিউড অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তিনি বুধবার রাতে বঁটি হাতে রাস্তায় নামলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন বাঁধন। আগস্টের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টিতে ভিজে ছাত্রহত্যার প্রতিবাদ করতে রাজপথে নেমেছিলেন তিনি। তবে ছাত্র আন্দোলনের শেষে শুরু হওয়া অরাজকতা নিয়েও মুখ খুলতে ভয় পাননি এ অভিনেত্রী।
অবাধে লুটতরাজ, ভাঙচুর, সংখ্যালঘু হিন্দুদের হত্যায় পাহারা দিতে রাস্তায় নামেন বাঁধন। বুধবার রাতে বঁটি হাতে পাহারা দিতে দেখা গেল এ অভিনেত্রীকে। ফেসবুক স্টোরিতে নিজের বঁটি হাতে ছবি শেয়ার করে জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন লেখেন, ‘মাঝরাত’।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢালিউড অভিনেত্রী বাঁধন বলেছেন, ‘কিছু সুবিধাবাদী মানুষ লুট করছেন। কিছু সাম্প্রদায়িক ও উগ্র চিন্তার মানুষ আছেন, যারা এই আন্দোলনকে ঢাল বানিয়ে নিজেদের এজেন্ডাকে পূরণ করতে চেয়েছেন। জানি না আমাদের এখানকার কিছু সংবাদমাধ্যম ছাড়া সবাই সঠিকটা দেখাচ্ছেন কিনা! তারাও তো অন্ধ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘যে ধরনের সহিংসতা ঘটেছে, তার জন্য আমরা অবশ্যই দুঃখিত। আমি চাই, এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকুক। এখানে কেউ সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নন। বাঁধন বলেন, বাংলাদেশে যারা জন্মেছেন, দেশটা সবার— আমরা সবাই বাংলাদেশি। তিনি বলেন, আমরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-আদিবাসী— কেউ আলাদা নই। আমরা এমন রাষ্ট দেখতে চাই, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। ছাত্রদের স্পিরিটকে কাজ লাগাতে পারলে, তারাই আমাদের পথপ্রদর্শক হবেন। আমি এবং আমরা বারবার বলছি— আমরা ছাত্রদের কাছে কৃতজ্ঞ বলে জানান এ অভিনেত্রী।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে পরাজয় বরণ দেশ থেকে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গত ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির জেরে দুই দেশ তাকে আশ্রয় দিতে রাজি নয়।