‘মোশাররফ করিম দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা অভিনেতা’
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম
দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘তুফান’। সম্প্রতি বাংলাদেশে ঈদে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বক্স অফিস থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে এ ছবি। রায়হান রাফি পরিচালিত ‘তুফান’ ছবিটি কলকাতায় ৫ জুলাই মুক্তি পেয়েছে। এ ছবিতে অভিনয় করেছেন বাংলার কিং শাকিব খান, টালিউড নায়িকা মিমি চক্রবর্তী, চঞ্চল চৌধুরী, নাবিলার ছাড়াও বাংলাদেশের একাধিক জনপ্রিয় অভিনেতা।
তুফানে আরও এক অভিনেতা অভিনয় করেছেন, তিনি হলেন— লোকনাথ দে। তবে সেভাবে নজরে আসেননি তিনি। আনন্দবাজার সূত্রে জানা যায়, তার একাধিক দৃশ্য নাকি ছেঁটে ফেলা হয়েছে। তবে সেসব নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই বলে জানান লোকনাথ, ‘আসলে একটা ভালো কাজ হলে তার আনন্দে ভেসে থাকা যায়, প্রতিকূলতাগুলো মাথায় থাকে না। আমারও কিছু ডেট নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, হয়তো কিছু দৃশ্য বাদ পড়েছে। তবে সেটি নিয়ে ভাবছি না।‘
“ছবির পরিচালক রায়হান রাফি যে ছবি বানিয়েছেন, সেটিতে কুর্নিশ জানানোর মতো। ইতোমধ্যে এ ছবিটি বাংলাদেশে নজির গড়ে ফেলেছে। অনেকেই হয়তো বলিউডের ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন কিংবা দক্ষিণী ছবি ‘কেজিএফ’-এর তুলনা টানতে পারেন। কিন্তু ‘তুফান’ অবশ্যই ওই ধরনের বড় বাজেটের ছবি নয়। রাফির ভাবনার ক্যানভাসটা বড়। যেটি ভালো লেগেছে, এই ছবিতে পরিচালক বাংলাদেশের তারকা শাকিবকে যে মুনশিয়ানা দিয়ে ব্যবহার করেছে, সেটি প্রশংসার দাবি রাখে। যদিও শাকিব ছাড়াও চঞ্চল চৌধুরী, মিমি চক্রবর্তী, নাবিলা, গাজী রাকায়েতের মতো তারকারা রয়েছেন। সামগ্রিকভাবে এটা ‘মাল্টিস্টার’ ছবি।“ একটানা কথাগুলো বলে গেলেন অভিনেতা লোকনাথ দে।
সামাজিকমাধ্যমে অনেকেই রণবীর কাপরের ‘অ্যানিমেল’ ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পান—এমন প্রশ্নে সেটি মানতে নারাজ লোকনাথ বলেন, ‘গল্পের দিক থেকে একেবারেই ‘অ্যানিমেল’-এর সঙ্গে এই ছবির তুলনা করা যাবে না। তবে নায়কের সাজসজ্জা মিলতেই পারে, সেটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা অনর্থক।’
‘তুফান’-এর সাফল্যে তিনি খুশি। কলকাতার ছবি সে পরিমাণ ব্যবসায়িক সাফল্য পাচ্ছে না বলে আফসোস লোকনাথ দের। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো ছবি ৫ কোটি ব্যবসা করলেই সাকসেস পার্টি দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় ‘তুফান’ হয়তো অনুপ্রেরণা হতে পারে। বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে বাংলা ছবি নিয়ে উন্মাদনা রয়েছে, যেটি আমাদের এখানে নেই। তাই খানিকটা কোণঠাসা আমাদের এখানকার ছবি।‘ তবে তিনি নিশ্চিত, এখনকার ছবি ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ মূলধারার বাণিজ্যিক ছবি সাফল্য না পেলে অন্যধারার ছবিরও ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেই মনে করেন লোকনাথ দে।
‘তুফান’ ছবির চিত্রনাট্য পড়ে প্রথমে কাজ করতে রাজি হননি বলেই জানান লোকনাথ। প্রথমে খুব একটা সম্মতি না দিলেও পরে মত পাল্টান তিনি। লোকনাথ বলেন, ‘শাকিবের ছবি আগে দেখিনি, তবে নাম শুনেছি। এ ছাড়া চঞ্চল চৌধুরী, ফজলুর রহমানের মতো অভিনেতারা রয়েছেন ছবিতে। তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। তাই ছবিটি করার সম্মতি দিই। ভাবলাম, একটা কাজ করলাম। তবে আমি আমার কাজ নিয়ে খুব আশা রেখেছি তেমন নয়; ছবিটা ভালো হয়েছে— এটি বলতে পারি।’
শাকিব খানের ক্যারিশমা এপার বাংলার দেব-জিৎদের ছাপিয়ে গেছে কিনা—এমন প্রশ্নে খানিক দোনাটানায় লোকনাথ দে বলেন, ‘আসলে উত্তরটা হ্যাঁ আবার না। শাকিব খান বাংলাদেশে যে জায়গাটায় রয়েছেন, সেখানে আমার মনে হয় এক থেকে দশের মধ্যে তিনিই। সেই জায়গায় অন্য অভিনেতারা ‘ব্যাকফুটে’। কিন্তু আমাদের এখানে তেমন নয়। আমাদের জিৎ-দেব আছে। ওদের শুধুই শাকিব। জিৎ যেমন চেষ্টা করছেন। দেব অন্যধারার ছবি করছেন। যে ধরনের ছবি করে দেব সেই উচ্চতায় পৌঁছেছেন সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তবেই ইন্ডাস্ট্রির ভালো হবে। তবে বর্তমান সময় দুই দেশের যৌথ প্রযোজনায় আরও ছবি হওয়ার দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশের একাধিক অভিনেতার সঙ্গে কাজ করলেও মোশাররফ করিমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ লোকনাথ দে বলেন, ‘মোশাররফ করিমকে আমার মনে হয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা অভিনেতা।’
শাকিব খানের জন্য সেটে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে— সেটি যেমন মনে হয়েছে, তেমনই অভিনেতা শাকিবের প্রশংসা লোকনাথের মুখে। তিনি বলেন, ‘শাকিব এমন একজন, যাকে সাজেশন দেওয়া যায়। আমি থিয়েটারের লোক, তাই সিনকে বিভিন্নভাবে— কীভাবে করতে হয় সেগুলো বলেই থাকি। সেটি উনি খুবই সহজভাবে গ্রহণ করেছেন। তবে সবার সঙ্গে বসে যে খুব হাসিঠাট্টা করছেন তেমন নয়; স্টারডমটা কেমন করে রাখতে হয় সেটি জানেন।’ সূত্র: আনন্দবাজার।