
প্রিন্ট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৭ এএম
ক্ষুব্ধ জাতির কাঁধে শিশুটির লাশ : অশ্রুমেদুর অনন্ত যাত্রা
মুকুলেই ঝরে গেল মাগুরার ফুল
মৃত্যুর আগে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, শেষবার আর হৃৎস্পন্দন ফেরেনি-আইএসপিআর * ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁসি চাইলেন শিশুটির মা * প্রধান উপদেষ্টা ও সেনা বাহিনীর শোক * মাগুরায় ধর্ষকের বাড়িতে আগুন

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
শ্রান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে মাগুরার সেই শিশু। জাগবে না কোনো দিন, চারদিক আলো করে মুকুল থেকে আর ফুটবে না সে । ৮ বছর বয়সে তার পুতুল নিয়ে খেলার কথা। কিন্তু নরপিশাচদের হিংস্র থাবায় মুকুলেই ঝরে গেল মাগুরার সেই ফুল। মানুষরূপী শকুনেরা খাঁমচে খুবলে খেয়েছে তার নরম শরীর। টানা ২০৪ ঘণ্টা ছোট্ট শরীর সেই যন্ত্রণায় ছটফট করেছে। প্রায় এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে পৃথিবীকে ধিক্কার জানিয়ে একরাশ অভিমান বুকে চেপে চিরবিদায় নিয়েছে। চিৎকার দিয়ে পৃথিবীতে আগমনের ঘোষণা দেওয়া শিশুটি বিদায় বেলায়ও দেশ নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। কান্নায় ভাসিয়েছে দেশবাসীকে একই সঙ্গে করেছে অপরাধীও। ক্ষুব্ধ মানুষগুলোর চোখের পানিতেই শুরু হয় তার অনন্ত যাত্রা।
রাষ্ট্রযন্ত্র মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিরাপত্তা দিতে না পারলেও বাঁচাতে সব ধরনের চেষ্টা করেছিল। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সিএমএইচ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে শিশুটি (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সারা দেশে। ধর্ষকের বিচারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই দেশ উত্তাল। এঅবস্থায় বৃহস্পতিবার আসে মৃত্যুর খরব। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভের বিস্ফোরন ঘটে। দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ জনতা মাগুরায় ধর্ষকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ধর্ষকদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসির দাবি তোলেন আন্দোলনকারীরা। ধর্ষণ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি চেয়েছেন অবুঝ শিশুটির মা। শিশুটির লাশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় নেওয়া হয়েছে। এর আগে সিএমএইচে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রাত সাড়ে ৮টায় মাগুরায় স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিশুটির লাশ কাঁধে নিয়ে দ্বিতীয় জানাজায় শরিক হন বিক্ষুব্ধ জনতা। সেখানে জানাজা শেষে দাদার বাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। শিশুটির মৃত্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি মামলার আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অনেকেই শোক প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে।
এদিকে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার আগামী ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে। তিনি বলেছেন, বিশেষ ব্যবস্থায় আজকেই (বৃহস্পতিবার) ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। আগামী ৫ দিনের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। ৭ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু হবে। ৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। এর আগে ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৮ বছরের শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরদিন শুক্রবার (৭ মার্চ) তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গলার আঘাত গুরুতর হওয়ায় শ্বাস নিতে হচ্ছিল যন্ত্রের সাহায্যে। অবস্থার অবনতি হলে ৮ মার্চ (শনিবার) বিকালে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ গণমাধ্যমকে জানান, এদিন সকালে দুই দফায় শিশুটির ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে এসেছিল। কিন্তু দুপুর ১২টায় আবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। এই দফায় সিপিআর দেওয়ার পরও তার হৃৎস্পন্দন ফেরেনি। দুপুর ১টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এদিন বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর বলেছে, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে-মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে এবং যে কোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
এর আগে চিকিৎসা চলাকালে সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার ৮ বছর বয়সি শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছিল। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। শিশুটির রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০-৪০ মিমি. পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী। সিএমএইচের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
অবুঝ শিশুটিকে ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁসি চেয়েছেন তার মা। বৃহস্পতিবার সিএমএইচের সামনে শিশুটির মা গণমাধ্যমের কাছে এ দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে যারা খারাপ কাজ করেছে তাদের ফাঁসি চাই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, সিএমএইচ থেকে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি মাগুরা নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে মেয়ের লাশ দাফন করা হবে।
এর আগে রোববার শিশুটির মা গণমাধ্যমকে বলেন, আগের দিন (মঙ্গলবার) তার মেয়ে ফোনে কান্নাকাটি করে বোনের বাসা থেকে নিজের বাসায় চলে আসতে চেয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, আর দুইটা দিন থাকতে। তারপর নিয়ে আসবেন। এখন তার একটাই আফসোস। বলেছেন, ‘ইশ্! ক্যান যে পাঠাইছিলাম! মেয়ের কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না। আপনাকে ছবি তুইলা দেখাতে পারলে বুঝতে পারতেন কী কষ্ট পাচ্ছে! আল্লাহর কাছে মেয়ের দাবি ছাইড়া দিছি।’ এই মা আরও বলেন, ‘মেয়ে বোনের বাসায় যেতে চাইছিল না। জোর করে পাঠাইছিলাম। যদি না পাঠাইতাম তাহলে এই অবস্থা হতো না।’
এদিকে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর মামলাটির তদন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির মায়ের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেয়ের জামাইয়ের সহায়তায় শ্বশুর (মেয়ের শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাসুরও জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান। এই মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুর এই চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিশুটির মা উল্লেখ করেছেন, ৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে। এরপর সকাল ৬টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।
ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশের পর ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে সারা দেশ। প্রতিবাদ জানাতে দলমত নির্বিশেষে পথে নামেন হাজারো মানুষ। মেডিকেল, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রার্থনায় বসে অনেকে। কিন্তু সব চেষ্টা বিফল। না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার খবরে বিক্ষুব্ধ জনতার আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আলটিমেটাম ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ প্রতিষ্ঠা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের মামলার বিচার সম্পন্ন করতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
দাদার বাড়িতে দাফন, জানাজায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস : মাগুরা প্রতিনিধি জানান, দাদাবাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সোনাইকুন্ডি গ্রামে শিশুটিকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় শহরের নোমানী ময়দানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন-খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এছাড়া জানাজায় অংশ নিয়েছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এমবি বাকেরসহ হাজারো মানুষ। এরপর রাত সাড়ে ৮টায় শ্রীপুরের সোনাইকুন্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাদাবাড়ির কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় জেলা ছাত্রদল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা শহরের ভায়নার মোড়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং চিফ জুডিশিয়াল আদালতের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিকাল ৪টার দিকে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভায়না মোড় অবরোধ করেন। এ সময় মহাসড়কে বিশাল যানজটে আটকা পড়ে কয়েক হাজার পরিবহণ।
ধর্ষকের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ : শিশুর প্রথম জানাজা শেষে ধর্ষক হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপাড়ায় এই বাড়িতে থাকেন হিটু শেখ, তার স্ত্রী জাহেদা এবং দুই ছেলে রাতুল ও সজিব। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে মিছিল নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। তবে ওই পরিবারের অভিযুক্ত চার আসামি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বাড়িটি তালাবদ্ধ ছিল। মাগুরা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রিপন হোসেন বলেন, হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমরা গাড়ি নিয়ে রওয়ানা দিলেও মাঝপথে গ্রামের বিক্ষুব্ধ লোকজন বাধা দেন। এতে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।