দিনে হেলপার-শ্রমিক রাতে ভয়ংকর ছিনতাইকারী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৬ পিএম
দিনে বাসের হেলপার, চালক, দোকান কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও রাতের আঁধারে ভয়ংকর ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিতে জড়িত একাধিক চক্রের ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, অতি সম্প্রতি মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পেয়ে র্যাব টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করে। শুক্রবার রাতে র্যাবের একাধিক দল অভিযান চালিয়ে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতারদের মধ্যে ৫ জন পাটালি গ্রুপের, ৬ জন ‘লেভেল হাই’, ৬ জন ‘চাঁন গ্রুপ’, ৫ জন ‘লও ঠ্যালা গ্রুপ’ এবং ৭ জন ‘মাউরা ইমরান গ্রুপের সদস্য। বাকি ৭ জন অন্য গ্রুপের। প্রতিটি গ্রুপে প্রায় ২০-২৫ জন সদস্য থাকে।
আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পাটালি গ্রুপ সুজন মিয়া ওরফে ফর্মা সজিবের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের কারণে তারা ২/৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। শরিফের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন পরিচালিত হয়ে আসছে লেভেল হাই গ্রুপ। গ্রেফতাররা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
অতিরিক্ত ডিআইজি ছিনতাইয়ের ধরন সম্পর্কে বলেন, তারা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যেতো। বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতো। মাদক সেবনসহ মাদক ব্যবসার সঙ্গেও তারা জড়িত।
গ্রেফতারদের পেশা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন গাড়ির হেলপার ও ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা ইত্যাদি পেশার আড়ালে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতো। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ডিস ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তারা ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ তৈরি করে। গ্রেফতার রানা শিকদার, জুয়েল মিয়া ও সাগর গ্রেফতার হওয়া ফর্মা সজিবের সহযোগী। তারা ‘পাটালি গ্রুপ’ এর ফর্মা সজিবের নেতৃত্বে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতো। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত ১১টির বেশি মামলা রয়েছে এবং এ সব মামলায় তারা কারাভোগও করেছে। জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও জড়িয়েছে গ্যাং কালচারে। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।