ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন নিয়মে হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করালে ফি লাগবে ১০০ টাকা। নমুনা বাসায় গিয়ে সংগ্রহ করলে ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে।
বুধবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমন তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, সাংবাদিক ভাইয়েরাও বলেছেন, সরকার যে ফি নিচ্ছে, তাতে অনেক দরিদ্র লোকজন পরীক্ষা করতে কিছুটা অনীহা বোধ করছেন, আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাও করেছি। তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘সে অনুয়ায়ী, ২০০ টাকা যে ফি নেয়া হতো, এখন থেকে সেটা কমিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। যারা সেন্টারে গিয়ে, ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা করাবেন, তাদের এই টাকা দিতে হবে। আর বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে যদি পরীক্ষা করা হয়, সেখানে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা করা হয়েছে। এখন থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।’
দেশে যখন প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, তখন বিনাপয়সায় সরকারিভাবে এই পরীক্ষা করা হতো। পরে ২৯ জুন এতে ফি আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
তখন হাসপাতালে বা বুথে গিয়ে পরীক্ষা করালে ফি দিতে হতো ২০০ টাকা। আর বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করলে ফি দিতে হতো ৫০০ টাকা।
সরকার করোনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণের পর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সমালোচনা করেন। ফি নির্ধারণের পর পরীক্ষার হারও কমতে থাকে।
অবশ্য বেসরকারি হাসপাতালে আগে থেকেই পরীক্ষার জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। আর বেসরকারিভাবে বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য লাগছে সাড়ে চার হাজার টাকা।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়। ক্রমে তা মহামারী রূপ নিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরপর সংক্রমণ ও মৃত্যুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। মে’র মাঝামাঝিতে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। জুনে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এমন পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে নমুনা পরীক্ষা কমিয়ে দেয়া হয়।
পরীক্ষা কমায় নতুন রোগী শনাক্ত কমলেও শনাক্তের হার কমছে না।
এখনো প্রতিদিন পরীক্ষা করা নমুনার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নুমনা পজিটিভ বা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছে। যেদিন পরীক্ষা একটু বেশি হচ্ছে, সেদিন নতুন রোগীও বাড়ছে।
বাংলাদেশে এখন করোনা সংক্রমণের ষষ্ঠ মাস চলছে। কিন্তু মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।