
আইইডিসিআরসহ দেশের বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী হটলাইন নম্বরে বারবার কল করে অশ্লীল, কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে এক কিশোরকে (১৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সাইবার পুলিশের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডির প্রযুক্তিগত সহায়তায় সোমবার রাতে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ শহরের পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়া থেকে কিশোরকে আটক করেছে।
ওই কিশোর প্রতিদিন শতাধিক কল করে হয়রানি করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার পিতাকেও আটক করেছে পুলিশ। আটক কিশোরের নাম সাঈদ হোসেন। সে ফুলবাড়িয়া এলাকার রং মিস্ত্রি হাসেম আলীর ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করা করোনা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য-পরামর্শ এবং সময়োপযোগী সেবা দেয়ার উদ্দেশ্যে চালু করা হয় বেশকিছু হটলাইন নম্বর। এ সব হটলাইনে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে পরামর্শ এবং তথ্য সেবা দিয়ে থাকেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা দেয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করলেও অনেক কলারই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রশ্ন করছেন। বিশেষ করে হটলাইনে কোনো নারীকণ্ঠ শুনলেই অশ্লীল কথা বলেন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
আটককৃত কিশোর আইইডিসিআর, স্বাস্থ্য বাতায়ন, জাতীয় তথ্য সেবা বাতায়নসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী টোল ফ্রি হটলাইন নম্বরে কল করে ও বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে নারীকর্মীদের কুপ্রস্তাব দেয়। ওই কিশোর কোনো কোনো হটলাইন নম্বরে শতাধিকবার কল দেয়।
কিশোরের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি তার বাবার নামে রেজিস্ট্রেশন করা। অল্পবয়সী ছেলেকে মোবাইল কিনে দিলেও মোবাইল ফোন কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে, খোঁজ না রাখায় বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে জেলা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এ সব অবাঞ্ছিত কলের কারণে অহেতুক জরুরি এ সব নম্বর ব্যস্ত থাকে। এর ফলে আসলেই যার তথ্য বা সেবা দরকার তিনি সঠিক সময়ে সেবাটি পাচ্ছেন না। মার্চ মাসের প্রথম থেকেই করোনা সংক্রান্ত গুজব প্রতিরোধসহ দেশের জনগণ যাতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় এ ব্যাপারটি নিয়ে সাইবার পুলিশ, সিআইডি কাজ করে আসছে।
ডিএমপির বনানী থানায় একটি মামলা করে সাইবার পুলিশ। পরে সিআইডি ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশকে অপরাধী ওই ফোন ব্যবহারকারীর অবস্থান সম্পর্কে ধারণা দেয়। কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের একটি দল কুষ্টিয়া পৌরসভার ফুলবাড়িয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সোমবার সন্ধ্যায় কিশোর অপরাধীকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত কিশোর প্রতিনিয়ত হটলাইনে নারীকর্মীদের হয়রানিসহ অশ্লীল কথা ও বার্তা প্রেরণের বিষয়টি স্বীকার করেছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকায় একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিত ফোন ব্যবহারকারীর অবস্থান জেনে জেলা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে এক কিশোরকে আটক করেছে। সে ক্লাস সেভেনের ছাত্র। সে যে ফোনটি ব্যবহার করে সেটির সিম তার বাবার নামে রেজিস্ট্রেশন করা। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে নিজের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে কিশোর।