লকডাউন নিয়ে সংঘর্ষ: পা হারানো সেই মোবারক মারা গেছেন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২০, ০২:৩৩ পিএম

ছবি: যুগান্তর
লকডাউন অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পা কেটে নেয়া সেই মোবারক মিয়া (৪৫) মারা গেছেন।
তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান।
মোবারক উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মো. মকবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মোবারকের স্ত্রী সাবিয়া জানান, তার সামনেই মোবারককে মাটিতে সোজা করে শুইয়ে ফেলে কোপানো হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার স্বামী মারা যান।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল থানাকান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও থানাকান্দি গ্রামের সর্দার আবু কাউসার মোল্লার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। কয়েক দফায় চলা ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সমর্থক মোবারক মিয়ার এক পা কেটে নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গ্রামে আনন্দ মিছিল করেন আবু কাউসার মোল্লার সমর্থকরা। মিছিল থেকে পায়ের বদলে মাথা কেটে নিয়ে আসার কথাও বলা হয়।
এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ দুপক্ষের ‘প্রধান হোতা’ জিল্লুর রহমান ও আবু কাউসার মোল্লাসহ ৪৪ জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
ঘটনার পর পরই তাকে কোপানোর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেন মোবারক। তারা হচ্ছেন- থানাকান্দি হাতবাড়ি গ্রামের সিরাজের ছেলে খোকন, হাজিরহাটি গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে রুমান, জিল্লুর ছেলে শাহিন ও মালির ছেলে জাবেদ।
বাকিদের তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান। তার ওই বক্তব্য মোবাইলে করা ভিডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় মোট ১২-১৩ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী মোবারক করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়িতে ফিরেছিলেন। গ্রামে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন।