করোনা আতঙ্কের মধ্যেও ঈদের আমেজ!

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২০, ০৯:৫৬ পিএম

দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রীদের ভিড়। ছবি: যুগান্তর
মহামারী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারের কড়া নির্দেশনা দেয়ার পরও এর কোনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিটি মানুষকে অন্তত তিন ফুট দূরত্বে থাকতে বলা হলেও নৌযানে ভ্রমণ করা যাত্রীরা তিন ইঞ্চিও মানছেন না। ঠাসাঠাসি করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে লাখ লাখ মানুষ। যেন প্রত্যেকের মধ্যে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ!
জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে কর্তৃপক্ষের কঠোর সিদ্ধান্তে ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি যানবাহন পারাপারের লক্ষ্যে ফেরিসার্ভিস চালু রাখা হয়। এ সুযোগে চলাচলকারী ফেরিগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা।
ফেরিতে যাত্রীবাহী বাস পারাপার বন্ধ রাখলেও সাধারণ যাত্রীরা গাদাগাদি করে ফেরিতে নদী পারাপার হচ্ছে। এতে করে যাত্রীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার পর মঙ্গলবার থেকেই রাজধানী ছাড়ছে অসংখ্য মানুষ। তাদের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি। অথচ জনসাধারণকে ভালো থাকার জন্য এ ছুটি প্রদান করা হয়।
বুধবার সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ফেরিতে শত শত সাধারণযাত্রী ঠাসাঠাসি করে নদী পার হচ্ছে। এ কারণে ফেরিগুলোতে জরুরি যানবাহনের পূর্ণ লোড দিতেও হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। যেন মানুষের স্রোতের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে কর্তব্যরত কর্মীরা।
এ সময় ফেরিতে নদী পার হয়ে আসা বরিশালের বাসেদ আলী জানান, সরকার দশদিন ছুটি দিয়েছে, তাই নিরাপদ স্থান হিসেবে তারা গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন।
চলার পথে কারো দ্বারা সংক্রমণ হতে পারেন বললে তিনি জানান, আমরা শ্রমজীবী মানুষ। ঢাকায় কাজ করতে না পারলে চলব কিভাবে? তাই এখন কোনো নিয়ম দেখার সময় নেই। যে কোনোভাবেই গন্তব্যে যেতে হবে।
এ দিকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা গেছে যাত্রীবাহী যানবাহনের দীর্ঘ সারি। সরকারের বন্ধের আদেশ তারা মানছেন না। পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি সার্ভিস চালু থাকায় অসংখ্য যাত্রী ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। এতে করে কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য সফল না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ থাকায় এবং সারা দেশের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী ১৪টি ফেরিই চালু রাখতে হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে যাত্রীবাহী বাসের জন্য নির্ধারিত টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফেরি সার্ভিস চালু থাকার সুযোগে সাধারণ যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে তাদেরও তেমন কিছু করার নেই। তবে জরুরি যানবাহনের চাপ কিছুটা কমে এলে ফেরি সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।