সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগরের হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামের চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার একদিন পর বাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ফাটলের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এদিকে বেড়িবাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় চুনকুড়ি নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামের চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধের ৩০-৩৫ মিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ফাটল দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধের ফাটল পয়েন্টে আধুনিক মানের জিওটিউব দিয়ে বাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করে। কিন্তু একদিন পরেই রোববার দুপুরের জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেওয়া বাঁধের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত এ ভাঙন পয়েন্ট সংস্কার করতে না পারলে নদীর প্রবল স্রোতে সম্পূর্ণ বাঁধ ভেঙে মুন্সীগঞ্জ ও হরিনগর ইউনিয়নসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়তে পারে। ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়ি ঘের, মিঠা পানির পুকুর, ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব হোসেন বলেন, বাঁধে ফাটলের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে এখন জোয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্রোতের টানে বাঁধের বাকি অংশ যদি ভেঙে যায় তাহলে শ্যামনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে বাঁধটি সংস্কার করার জন্য; কিন্তু জানি না কয়দিন লাগবে। বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন বলেন, ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সকাল-সন্ধ্যা কাজ করছেন বাঁধটি সংস্কারের জন্য। তিনি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে বাঁধ সংস্কার কাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন সানি বলেন, চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে শনিবার ৩০-৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। শনিবার থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি হঠাৎ করে রোববার সকালে বাঁধের একাংশ ভেঙে নদীতে দেবে যায়। ফলে ৩০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য জিওটিউব দিয়ে ৫০/৬০ মিটার বিকল্প রিংবাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছি খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। এছাড়াও শ্যামনগরের কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর কাজও শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর বাজারের সন্নিকটে সিংহরতলী গ্রামে চুনকুড়ি নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়।