
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম

আরও পড়ুন
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আব্দুল কাদের মিলন নামে (৩৫) এক যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপন করেন। এরপর সৌদি আরব গিয়ে ওমরাহ পালন শেষে ঈদুল ফিতরের পর দিন তিনি দেশে আসেন।
পুলিশ তাৎক্ষণিক এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি। তবে নিহতের পরিবার বলছে- রাজনৈতিক কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপাবর্তী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিমখানার সামনে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
নিহত মিলন উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন মাঝিবাড়ির মো. ইসমাইলের ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুর রহীম রাকিব জানান, গত ৫ আগস্টের পর তার বড় ভাই মিলন বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর তিনি সৌদি আরব গিয়ে ওমরাহ পালন করেন। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন তিনি দেশে ফিরেন। শুক্রবার রাতে আমার ভাই মিলন আমার সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায় তার অসুস্থ শ্যালককে দেখতে যান। রাত ৯টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে কোম্পানীগঞ্জের চৌধুরীহাট বাজার এলাকার চুয়ানিরটেক এলাকায় সিএনজি পৌঁছলে ২-৩টি মোটরসাইকেলে কয়েকজন আমাদের ধাওয়া করে। বিষয়টি আমার ভাই বুঝতে পেরে তিনি তার মামাশ্বশুর যুবদল নেতা মাইন উদ্দিনকে মোবাইল ফোনে জানান। এর মধ্যেই মোটরসাইকেল আরোহীরা আমাদের ধরে ফেলে।
রাকিব আরও জানান, পরে হামলাকারীরা আমার ভাইকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিমখানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে ধাপে ধাপে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। যুবদল নেতা মাইন উদ্দিন আমাদের বাঁচাতে এলে হামলাকারীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি চলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রথমে আমার ভাইকে হামলাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী বিবি জুলেখা বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর আগে তার হামলার সঙ্গে জড়িত ২০-২৫ জনের নাম বলে গেছেন। তারা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমার এখন কারো নাম, কোনো কিছুই মনে আসছে না। পরে হামলার সঙ্গে জড়িতদের নাম জানাব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত ছিল না। গত ১৫ বছর সে এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছে। তার হাতে নিষ্পেষিত লোকজনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের শিকার হয়েছেন তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াত-বিএনপির লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।