
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
মেঘনা-তেঁতুলিয়ার অভয়াশ্রম এখন জেলেশূন্য

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৫ পিএম

আরও পড়ুন
ভোলার চরফ্যাশন উপকূলের মিঠাপানি অধ্যুষিত মেঘনা-তেঁতুলিয়ার অভয়াশ্রম এখন জেলেশূন্য। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের জাটকা সংরক্ষণ অভিযান গত ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। এরপরই দেখা গেছে এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য।
এর আগে কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫২টি অভিযান ও ১১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এ অভিযানে ইলিশ জাল ৯৮ লাখ মিটার, কারেন্ট জাল ১৭৭ লাখ মিটার ও ১১৭টি অন্যান্য জাল জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া ৬ জনের জেল ও ৪১ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার মৎস্য অভয়াশ্রমে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় চরফ্যাশন উপজেলা প্রশাসন উপজেলা মৎস্য দপ্তর ও পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ লঙ্ঘনের দায়ে একজনকে ৫০০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে আনুমানিক ১৮০০০ মিটার কারেন্ট জাল ও ২০টি বেহুন্দি জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, মার্চের শুরু থেকে এপ্রিলের শেষ দিন পর্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভয়াশ্রম এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গোটা অভয়াশ্রম এলাকা জেলেশূন্য। মেঘনার মোহনায় ঘুরে পেতে রাখা জালেরও সন্ধান মেলেনি।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার সাইফুল ইসলাম বলেন, মৎস্য নিধনের ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা বন্ধে এ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে ২ এপ্রিল বাবুরহাট এলাকায় জেলেদের হামলার শিকার হতে হয়েছে আমাদের।
হামলায় কোস্টগার্ডের সিসিকে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। ৩ এপ্রিল বাংলাবাজার এলাকায় পুনরায় জেলেদের একটি চক্র আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে ৩ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনা হয়।
এ হামলার ঘটনায় কোস্টগার্ড দুলারহাট থানায় অজ্ঞাতনামাসহ ২৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
কমান্ডার সাইফুল বলেন, এরপরও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে বরাদ্দের অপ্রতুলতা, জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় যানবাহন না থাকায় চরফ্যাশন উপজেলার মতো সুবিশাল জলায়তন নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই উপজেলার প্রায় অর্ধেক জলাশয় অভয়াশ্রমের আওতার বাইরে রয়েছে। এতে অনেকের মধ্যে মাছ ধরা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, যেসব অসাধু জেলে জাটকা নিধন করে, তারা মূলত প্রথম কয়েক দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নির্ণয় করে। এরপর তারা সুযোগ বুঝে জাটকা ধরার জন্য নদীতে নামে। এখন নদীর অভয়াশ্রম এলাকা একেবারেই ফাঁকা। তবে জাটকা সংরক্ষণে চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য ও কোস্টগার্ডের যৌথ টাস্কফোর্স এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।