
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২০ এএম
প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, সালিশ করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম

আরও পড়ুন
ঢাকার ধামরাইয়ে মাধ্যমিক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় সালিশি বৈঠক করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে।
ওই ইউপি মেম্বারের নাম মোহাম্মদ পলাশ মোল্লা। তিনি রুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মেম্বার ও ফরিংগা মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। উক্ত এলাকার ৫০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে নানা প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণ করে।
বুধবার বিকালে উপজেলার রুয়াইল ইউনিয়নের ফরিংগা এলাকায় এ ধর্ষণের চেষ্টা ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন রাতেই এক লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার)। ভুক্তভোগী পরিবারকে জরিমানার কোনো টাকা না দিয়ে লক্ষাধিক টাকা ওই ইউপি মেম্বার নিজের পকেটস্থ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রুয়াইল ইউনিয়নের ফরিংগা গ্রামের বৃদ্ধ তারাব আলী মোল্লা একই গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর চিৎকারে লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসে বৃদ্ধকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দেয়। খবর জানানো হলে রুয়াইল ইউপি সদস্য পলাশ পলাশ মোল্লা বিচারের আশ্বাস দিয়ে জনতার হাতে আটক ওই ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
আশ্বাস অনুযায়ী এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে মেম্বারের বাড়িতে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। মেম্বার পলাশ মোল্লার সভাপতিত্বে এই সালিশি বৈঠকে এক লাখ বিশ হাজার টাকায় বিষয়টি মিটমাট করা হয়। ওই সালিশি বৈঠকে ওই ধর্ষণচেষ্টাকারীর কাছ থেকে জরিমানার সমুদয় টাকা আদায় করা হয়। এর মধ্যে ভুক্তভোগীর পরিবারকে এক টাকাও না দিয়ে জরিমানার সব টাকা নিজের পকেটে ঢুকান ওই ইউপি মেম্বার পলাশ মোল্লা।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, ইউপি মেম্বার পলাশ মোল্লা প্রহসনের এ বিচার করেছেন। আমার কোমলমতি মেয়ের সর্বনাশ করেছে ওই লম্পট। আমি প্রহসনের বিচার সালিশ মানব না। আমি এ বিষয়ে আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করব।
অভিযুক্ত তারাব আলি মোল্লা বলেন, গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে ইউপি মেম্বার পলাশ মোল্লা আমাকে যে শাস্তি দিয়েছেন তা আমি মাথা পেতে নিয়েছি। আমি আমার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করেছি। পরবর্তী কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আর এ নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথাও নেই।
ইউপি মেম্বার পলাশ মোল্লা বলেন, ঘটনা মীমাংসা করা হয়েছে- এ কথা সত্য। তবে জরিমানার কোনো টাকা-পয়সা আমি নেইনি। মেয়েটির ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।
ধামরাই থানার রুয়াইল ইউনিয়নের বিট অফিসার মোহাম্মদ আকসার আলি বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।