
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৬ পিএম
ট্রেনের তেল চুরির ঘটনায় চালক-পরিচালকসহ ৮ জনের নামে মামলা

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

আরও পড়ুন
পূর্বাঞ্চল রেলপথের আখাউড়ায় ট্রেন থেকে তেল চুরি চক্রের সদস্যরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শক্তিশালী এ চক্রটি ট্রেন থেকে দেদার তেল চুরি করছে।
সোমবার রাতে চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রেন থেকে তেল চুরির ঘটনায় মঙ্গলবার ট্রেনচালক ও পরিচালকসহ ৮ জনের নামে আখাউড়া রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় রেলওয়ের উচ্চপর্যায়ের তিন সদস্যের একটি দল তদন্তে নেমেছে।
অভিযোগ রয়েছে, আখাউড়া রেলওয়ে ট্রাফিক ও লোকোশেডের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা এতে সরাসরি জড়িত। শেখ হাসিনার পতনের পর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয়েছে ইঞ্জিনের তেল চুরি। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে দেদার তেল চুরি শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথের আখাউড়া রেলজংশন এলাকার কোড্ডা নামক স্থানে মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে নিয়মিত তেল চুরি হয়। ট্রেনচালক ও পরিচালকসহ ট্রেনে কর্মরত সবাই এ চুরির সঙ্গে জড়িত। একটি শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেট এখানে ট্রেন থামিয়ে ইঞ্জিন থেকে তেল চুরি করছে দীর্ঘদিন ধরে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি জসিম উদ্দিন খন্দকার যুগান্তরকে জানান, সোমবার রাত সোয়া ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তেল চুরি প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী একটি কন্টেইনার ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে চুরির সময় হাতেনাতে ২১০ লিটার তেল উদ্ধার করে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ। এ ঘটনায় ট্রেনচালক মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী চালক আ. রাজ্জাক, ট্রেন পরিচালক মো. ওমর ফারুকসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের পারভেজ ওরফে জাফর (৩১), কাজী রতন (৪৫), মুরাদ মিয়া (২৮), ইসহাক মিয়া (৩০) ও শামীম মিয়া (৪৭) নামে ৮ জনের বিরুদ্ধে আখাউড়া রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. এরশাদুর রহমান যুগান্তরকে জানান, ওই দিন রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দেখা যায়, একটি মালবাহী কনটেইনার ট্রেন সিগন্যালের লাইন ক্লিয়ার (সবুজ সংকেত) থাকা সত্ত্বেও ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনের লাইট বন্ধ অবস্থায় থামানো আছে। পরবর্তীতে অপারেশন টিম ট্রেনের কাছে গেলে ট্রেনের এলএম (লোকোমাস্টার) এবং সহকারী এলএম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইঞ্জিনের সামনের লাইট জ্বালিয়ে ট্রেনের গতি বাড়িয়ে দ্রুত ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
তিনি জানান, আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য। তেল চুরির ঘটনায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী কমান্ড্যান্ট আরএনবি মো. ফিরোজ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত দল গঠন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আখাউড়া লোকোশেড ইনর্চাজ উপসহকারী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, এ তেল চুরির ঘটনার সঙ্গে তাদের অফিসের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জড়িতরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে কর্মরত।
পূর্বাঞ্চলের সহকারী কমান্ড্যান্ট আরএনবির তদন্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলী যুগান্তরকে জানান, বুধবার ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে বৃহস্পতিবার তারা তদন্তে নেমেছেন। ট্রেনে কর্মরত চালক ও পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।