
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
পাবিপ্রবি’র নির্মাণাধীন ভবন থেকে আনসার সদস্যের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

প্রতীকী ছবি
আরও পড়ুন
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন থেকে আরজু মওলা (৩০) নামের এক আনসার সদস্যের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাতে পাবনা থানা পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দশতলা ভবনের ১০তম তলার একটি কক্ষ থেকে ওই আনসার সদস্যের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বললেও পাবিপ্রবি’র একাধিক সূত্র ও নিহতের স্বজনরা বলছেন বিষয়টি রহস্যজনক। নিহত আরজু মওলা জয়পুরহাট সদর উপজেলার রাংতা গোয়াবাড়ি ঘাট গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাবিপ্রবি’র ওই ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ভবনটি এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। বুধবার বিকালে নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম ভবনটি হ্যামার টেস্টসহ প্রযুক্তিগত পরীক্ষা করতে গেলে তারা তীব্র দুর্গন্ধ পান এবং বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানান।
সন্ধ্যায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পাবনা সদর থানা ও জেলা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর রাতে সদর থানা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি, ডিএসবি এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে ভবনের ১০তলার একটি কক্ষে মেঝেতে একটি অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। লাশের পাশে থাকা একটি বন্ধ মোবাইল উদ্ধারের পর সেটি চার্জ দিয়ে সচল করে পরীক্ষার পর জানা যায় যে, ফোনটি আনসার সদস্য আরজু মওলার।
বুধবার রাত ১১টার দিকে আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. ফজলে রাব্বির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আরজু মওলা অঙ্গীভূত আনসার সদস্য। ৩ বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ৭ মার্চ ডিউটির কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প থেকে বের হন মওলা। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ থাকেন। তার গ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তারাও জানান, মওলা বাড়িতে যাননি।
গত ২ এপ্রিল সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান পাবনা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। বুধবার নিহত মওলার স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার স্বজনদের পাবনায় আসার কথা রয়েছে।
পাবনার পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁন বলেন, ধারণা করা যাচ্ছে ঘটনাটি সম্ভবত ঈদের আগেই ঘটেছে। এজন্য লাশটি পঁচে গেছে। পাবনা থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, লাশের গলায় রশি পেঁচানো ছিলো। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হচ্ছে।বৃহস্পতিবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়না তদন্তের পরই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন সহজ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি রহস্যজনক। পুলিশ লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে গেছে। এদিকে আনসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, আনসার মওলা কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা ধার নেন। এই টাকার জন্য পাওয়ানাদাররা প্রায়ই তার কাছে আসতেন। এ অবস্থার মধ্যে তার নিখোঁজ হওয়া এবং মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক।