
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৬ এএম
ট্রাক ছিনতাইকারীদের ধরতে গিয়ে হামলায় দুই পুলিশ আহত

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩ পিএম

আরও পড়ুন
বগুড়ায় ট্রাক ছিনতাইয়ের পর চালককে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টাকারীদের ধরতে গিয়ে তাদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার সাবগ্রাম ধাওয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবদলের তিন নেতাকর্মী ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মনসুর সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বুধবার দুপুরে ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাজমুল হক জানান, ট্রাক মালিকের পক্ষে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা হলেন- এটিএসআই ফিরোজ আহমেদ ও কনস্টেবল মাহবুব আলম।
গ্রেফতার তিন ছিনতাইকারী হলেন- বগুড়া সদরের ধাওয়াপাড়ার আমিনুল হকের ছেলে, বগুড়া পৌরসভার ২০নং ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নূর আলম সুইট (৩৫), নারুলী দক্ষিণপাড়ার মৃত নূর আলমের ছেলে যুবদল কর্মী জুয়েল মিয়া (২৫) ও উত্তর ধাওয়াপাড়ার আলম প্রামাণিকের ছেলে যুবদল কর্মী রাব্বি হোসেন (২০)।
নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাজমুল হক জানান, সারিয়াকান্দিতে বালুভর্তি একটি ট্রাক মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া শহরের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়কে পৌঁছলে একদল দুর্বৃত্ত ট্রাক থামিয়ে চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে চালককে দিয়ে ট্রাক নারুলীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ধাওয়াপাড়ার একটি মাঠে এনে বালু আনলোড করে। এরপর খালি ট্রাক একটি স মিলের পাশে রেখে দেয়। ট্রাক চালককে নূর আলম সুইটের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে ফোনে ট্রাক মালিকের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, মালিক তার ট্রাক পুড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি নারুলী পুলিশ ফাঁড়িতে জানিয়ে তার ট্রাক উদ্ধারের অনুরোধ করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ফোর্স চালককে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে। ট্রাকটিও উদ্ধার করলে সুইট চাবি নিয়ে পালিয়ে যায়। মেকানিক ডেকে এনে ট্রাক নিরাপদ স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে প্রাচীরের পাশ থেকে দুর্বৃত্তরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ইটের আঘাতে নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই ফিরোজ আহমেদ ও কনস্টেবল মাহবুব আলম গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত ফোর্স সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে পুলিশ হামলাকারীদের শনাক্ত করার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে সোনাতলার একটি চর থেকে ছিনতাইকারী যুবদল নেতা নূর আলম সুইট, যুবদল কর্মী জুয়েল মিয়া ও যুবদল কর্মী রাব্বি হোসেনকে গ্রেফতার করে। এরা ওই এলাকায় ছিনতাই, অপহরণ, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। বুধবার তাদের সদর থানায় সোপর্দ ও ফাঁড়ির এসআই মনসুর পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেন। চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ট্রাক ছিনতাই, মুক্তিপণ দাবিসহ বিভিন্ন অপরাধে অপর একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া শহর যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব মমি জানান, নূর আলম সুইট ২০নং ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তাই গত মার্চ মাসের ১৩ তারিখে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অপর দুজন তাদের সংগঠনের কেউ নয়।