
প্রিন্ট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৮ পিএম
রাজশাহীতে ছয় মাস বালু উত্তোলন বন্ধের আদেশ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম

আরও পড়ুন
রাজশাহীতে পদ্মার বালুমহালগুলো থেকে ছয় মাস বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তার আগে পদ্মার চিহ্নিত বালুমহালগুলোতে কত পরিমাণ উত্তোলন যোগ্য বালু মজুত আছে তার জরিপ করার কথা বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সম্প্রতি রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দিয়েছেন। বরেন্দ্র অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদন করেন মাহফুজা মোরশেদ নামের একজন সাবেক ইজারাদার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা নদী থেকে রাজস্ব দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত আবেদনকারীকে বালু উত্তোলনের জন্য আদেশ দিলে ২০১৩ সালে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব খাতে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা করা হয়।
আবেদনকারীকে ২০ লাখ ঘনফুট বালু তোলার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু তৎকালীন জেলা প্রশাসন আবেদনকারীকে বালু মহাল বুঝিয়ে না দিয়ে আদালতের আদেশকে উপেক্ষা করেন। এ সুযোগে তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পদ্মার বিভিন্ন বালুমহাল থেকে অবাধে বালু লুট করে।
অভিযোগ করার পরও ওই সময় প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারকে রাজস্ব পরিশোধ করলেও বরেন্দ্র অ্যাসোসিয়েটস একদিনের জন্যও বালু উত্তোলনের সুযোগ পায়নি।
এদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত অক্টোবরে বরেন্দ্র অ্যাসোসিয়েটস উচ্চ আদালতে পুনরায় রিট করে রাজশাহীর সব বালুমহালে বালু উত্তোলন বন্ধসহ ২০০৭ সালে দেওয়া উচ্চ আদালতের আদেশ কার্যকরের আবেদন করেন।
গত ১৭ মার্চ উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ বরেন্দ্র অ্যাসোসিয়েটসকে বালুমহাল বুঝিয়ে দিয়ে সব ইজারা ব্যবস্থা স্থগিত ও বালু উত্তোলন বন্ধের আদেশ দেন জেলা প্রশাসককে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া পশ্চিম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি আমরা উচ্চ আদালতের সর্বশেষ আদেশ নিয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। আমরা জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি আমাদের বালুমহাল বুঝিয়ে দিতে। কারণ আমরা রাজস্ব পরিশোধ করেছি; কিন্তু বালু উত্তোলন করতে পারিনি সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে জেলা প্রশাসন যদি বালুমহালগুলো থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেন আমরা আবার উচ্চ আদালতে যাব।
এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আকতারকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
আসন্ন বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য ইতোমধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসন পদ্মার চারটি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। তবে উচ্চ আদালতের আদেশের কারণে নতুন ইজারাদারদের বালু উত্তোলনের কার্যাদেশ দেওয়া বন্ধ রেখেছে জেলা প্রশাসন।