
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
উত্তরা থেকে বিউটির লাশ কার্টনে করে মানিকগঞ্জে ফেলে যান রঞ্জন

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম

আরও পড়ুন
দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্ত্রী বিউটি গোস্বামীকে নিজেই শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্বামী অলোক রঞ্জন গোস্বামী। হত্যার পর এসির কার্টনবন্দি মরদেহটি প্যাকেট করে ভাড়া করা প্রাইভেটকারে করে ঢাকার উত্তরা থেকে মানিকগঞ্জের মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কের এগারোশ্রী এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান তিনি।
এ ঘটনার ২ দিনের মাথায় ঘাতক স্বামী অলোক রঞ্জন গোস্বামীকে (৩৯) ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে মানিকগঞ্জ ডিবি (পূর্ব) পুলিশের একটি টিম।
মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় নিহতের বাবা নিহাররঞ্জন গোস্বামী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ৫ এপ্রিল। এর আগে গত ৪ এপ্রিল মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কের এগারোশ্রী এলাকায় কার্টনবন্দি অবস্থায় বিউটির মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক স্বামী অলোক রঞ্জন জানিয়েছেন- স্ত্রী বিউটি গোস্বামীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। দাম্পত্য কলহের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে পৃথক রুমে ঘুমাতেন তারা। স্বামীর দাবি, বেশির ভাগ সময় ফেসবুক, অনলাইন বিজনেস ও লাইভ ভিডিও করে সময় কাটাতেন বিউটি। এ কারণে দুই সন্তানকেও সময় দিতে পারতেন না। কিছু বললেই মা-বাবা তুলে গালাগালি করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন তাদের দুজনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়। একপর্যায়ে বিউটি গোস্বামী রান্না করতে গেলে পেছন থেকে মুখ ও গলা চেপে ধরে স্বামী। এরপর ছেড়ে দিলে ফ্লোরে পড়ে মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। পরে এসির কার্টনে ভরে রশি দিয়ে বাঁধা হয় তাকে। এরপর গ্রামের আত্মীয়স্বজনদের ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তির সহায়তায় একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করা হয়। প্রাইভেটকারটির পেছনের সিটে কার্টুনটি বসিয়ে রাজধানীর উত্তরা থেকে মানিকগঞ্জের মিতরা এলাকায় আসে তারা।
সহযোগীর মাধ্যমে কৌশলে চালককে সামনে ডেকে নিয়ে মানিকগঞ্জের মিতরা-বরুন্ডি আঞ্চলিক সড়কের এগারোশ্রী এলাকায় স্ত্রীর কার্টনবন্দি মরদেহটি ফেলে দিয়ে প্রাইভেটকারে করেই পালিয়ে যায় স্বামী ও তার সহযোগী।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই সন্তানের জননী বিউটি গোস্বামী লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার নিহারঞ্জন গোস্বামীর মেয়ে। স্বামী অলোক রঞ্জনের সঙ্গে ঢাকার উত্তরায় বসবাস করতেন তিনি।
অলোক রঞ্জন বায়িং হাউজে চাকরি করতেন। অলোক রঞ্জন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তরা গ্রামের মৃত প্রদীপ কুমার গোস্বামীর ছেলে। পরিবারটি ঢাকার উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় বসবাস করতেন।
ঘটনার চার দিনের মাথায় অলোক রঞ্জন গোস্বামীকে ফরিদপুরের গোয়ালচামট এলাকার একটি ফিলিং স্টেশন থেকে ৬ এপ্রিল গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবারই আদালতে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক স্বামী অলোক রঞ্জন। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।