
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান, ২৩ প্রাণী জব্দ

ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
-67f5586e6cb56.jpg)
আরও পড়ুন
অবৈধভাবে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের দায়ে ময়মনসিংহে একটি মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এ সময় চিড়িয়াখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকালে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানে অবস্থিত মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে এসব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়।
চিড়িয়াখানাটিতে অবৈধভাবে রাখা- ১টি অজগর সাপ, ২টি ময়ূর, ৫টি হরিণ, ২টি মদন টাক পাখি, ১টি কুমির, ২টি ভাল্লুক, ১টি সজারু, ৫টি বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জব্দ করা হয়।
জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবত এই চিড়িয়াখানাটি তৎকালীন মেয়র ইকরামুল হক টিটুর অনুসারীরা পরিচালনা করে আসছিল। মূলত এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়া উপজেলার সংসদ সদস্যের পুত্র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল এটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাটিতে টিকিটের মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার প্রসার ঘটানো হয়।
পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা গা-ঢাকা দেয় এবং চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ ছিল। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভাল্লুকের পায়ে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। এর সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিনি চিড়িয়াখানার পরিচালক মিজানুর রহমান মামুন বলেন, মানুষের চিত্ত-বিনোদনের কথা চিন্তা করে নামমাত্র বিনিময় মূল্যে চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের প্রতি সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি ভাল্লুক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হলে তার পায়ে পচন ধরে এবং ঘা হয়ে যায়। অসুস্থ প্রাণীটিকে ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এখান থেকে ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। জব্দকৃত প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে এবং কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বন্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে।