
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
রায়পুরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৩ এএম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে দিনমজুরের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, গ্রাম আদালত ও জেলা আদালতে রায় পেয়েও জমিতে যেতে পারছেন না তিনি। শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে বাধ্য হয়ে বেড়িবাঁধে ঘর তুলে থাকছেন তিনি। জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, জমিটি আমি পৈতৃকভাবে পেয়েছি।
ঘটনাটি উপজেলার দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনার পাড়ে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন
চরকাছিয়া (বটতলা এলাকা) গ্রামের। অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুল শিক্ষক আবুল হাসেম
(৭০) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য।
ভুক্তভোগী দিনমজুর আবুল কাশেম খাঁ জানান, ‘২০ বছর ধরে তার ৪৭ শতাংশ জমি
আবুল হাশেম দখল করে রেখেছেন। চার বছর আগে দিনমজুরের বসতঘর এবং পুকুরও দুই ছেলেকে নিয়ে
দখলে নেয় ওই আওয়ামী লীগ নেতা। নিন্ম আদালত ও গ্রাম আদালতে রায় পাওয়ার পরেও জমিগুলো
উদ্ধার করতে পারছেন না তিনি। সবকিছু হারিয়ে মেঘনার পাড়ে বেড়িবাঁধের পাশে বসতি করে মানবেতর
জীবনযাপন করছেন তিনি।’
আবুল কাশেম বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমি এ জমি ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করে আসছি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ মোল্লাসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে গিয়েও আমার
জমি পুনরুদ্ধার ব্যর্থ হই। লক্ষ্মীপুর জজ আদালত আমার বসতঘরসহ জমিগুলো বুঝিয়ে দিতে বললেও
আবুল হাসেম দখল করে রেখেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জুলমত আলী হাওলাদার (৬৮) ও হাফিজ উল্লা (৫২) বলেন, ‘জমি উদ্ধারের চেষ্টা করেও দিনমজুর আবুল কাশেমের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। গ্রাম আদালত ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ও এ জমি উদ্ধার সম্ভব হয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে আবুল হাশেম বলেন, ‘পৈতৃক সূত্রে ও স্থানীয়দের কাছ থেকে
কিনে ৪৭ শতাংশ জমি ভোগদখল করছি। বসতঘরসহ কোনো জমিই আবুল কাশেম পাবে না। সে আমার বিরুদ্ধে
মিথ্যা রটনা রটাচ্ছে, হয়রানি করছে। নিম্ন আদালতে আবুল কাশেম জমি পেলেও আমি হাইকোর্টে
আপিল করেছি। বিচারাধীন জমি নিয়ে কোনো ব্যক্তি কিছুই করতে পারবে না।’
দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি বলেন,
‘গ্রাম আদালতে ও জেলা জজ আদালত দিনমজুর আবুল কাশেমের জমি ফেরত দিতে আবুল হাসেমকে বলা
হয়েছিল। কিন্তু আবুল হাশেম কারো কথাই শুনেন না। সবার সহযোগিতা পেলে দিনমজুরের জমি উদ্ধার
সম্ভব হবে।’
রায়পুর সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি
অবগত না। দিনমজুর আবুল কাশেম সহযোগিতা চাইলে তদন্ত করে তাকে আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে।’