
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১২ পিএম
পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুর, ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম

আরও পড়ুন
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। ইট-পাটকেল ও লাঠির আঘাতে ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়ি।
আত্মরক্ষায় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া পুলিশকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ।
এর আগে শনিবার রাতে ওই থানার সাব-ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন বাদী হয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও কাজে বাধা দেওয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. দুখু মিয়ার মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের মো. আয়নাল হকের ছেলে মো. সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়।
ওই দিন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে গেটের টাকা ও পরে ‘নরম ভাত’ ঘিরে কনেপক্ষ ও বরপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, ধাক্কাধাক্কি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বরপক্ষের লোকজন একে একে ভাতের প্লেট ছুড়ে ফেলেন, চেয়ার ভাঙচুর করেন।
এ সময় কনের বাবার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের জ্যাঠা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে বরপক্ষের একাংশ তার কলার ধরে মাটিতে ফেলে মারধর করে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান, তবে বরসহ কয়েকজনকে আটক করেন এলাকাবাসী। পরে বরপক্ষের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন।
এ ঘটনার পরদিন শুক্রবার দিবাগত রাতে অবরুদ্ধ থাকা লোকজনকে উদ্ধারে তাদের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে যায় ওসিসহ সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কনেপক্ষের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। গাড়িতে লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং পুলিশের ওপর হামলা করে। প্রাণ রক্ষায় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলেন বিয়েবাড়ির উত্তেজিত লোকজন। পরে পুলিশের খবরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অবরুদ্ধ ওসিসহ অন্যদের উদ্ধার করেন।
পরে এ ঘটনায় শনিবার রাতে বিয়েবাড়ির ৫৯ জন নামীয় ও ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাদের উদ্ধার করি। এ সময় এলাকাবাসীর আচরণে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, বিয়েবাড়িতে বরসহ তার কয়েকজন অবরুদ্ধকে উদ্ধারে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাদের ওপর হামলা করা হলে আমি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেই। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলেন তারা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমরা উদ্ধার হই।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৯ জন নামীয় এবং ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।