
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাকপ্রতিবন্ধী নারীর

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ পিএম

আরও পড়ুন
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় সঙ্গে থাকা শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেছে সামেলা আক্তার (৩০) নামে বাকপ্রতিবন্ধী এক নারীর।
রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উপজেলার দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সামেলা আক্তার দৌলতদিয়া কিয়ামদ্দিন মোল্লাপাড়ার গহের আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা প্রতিবেশী শিশু পিংকি (৮) গুরুতর আহত হয়েছে। সে স্থানীয় ইদ্রিস মিয়া পাড়ার বাবলুর মেয়ে।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক জুয়েল রানা জানান, বাকপ্রতিবন্ধী সামেলা ও শিশু পিংকি একসঙ্গে রাস্তা পার হওয়ার জন্য ফোর লেন সড়কের মাঝখানে আইল্যান্ডের উপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ করে পিংকি সামেলার হাত থেকে ছুটে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করে। শামেলা আক্তারও তার পিছু পিছু দৌড় দিয়ে শিশু পিংকিকে আটকানোর চেষ্টা করেন।
ততক্ষণে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাস এসে তাদের সজোরে ধাক্কা দিলে দুজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে যায়। এ সময় শিশু পিংকির ডান পায়ের ওপর দিয়ে মাইক্রোবাসের চাকা উঠে যায় এবং এবং সামেলা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সামেলা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে শিশু পিংকির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে মাইক্রোবাসটি আটক করে চালক হৃদয়কে (৩২) গণধোলাই দেন। খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের এসআই ফারুক হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে চালককে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। অভিযুক্ত চালক ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মো. ইমানউদ্দিনের ছেলে।
গোয়ালন্দ মোড় আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার ওসি শামীম শেখ জানান, নিহত সামেলার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী মর্গে এবং আহত শিশু পিংকিকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক চালক ও গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।