
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৯ পিএম
এক খিলি পান ১৫৭৫ টাকা

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
-67efce1a717e7.jpg)
রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ঈদ মেলায় বাঘা দরগা শরিফের গেটের সামনে সিদ্দিক কবিরাজের পানের দোকান। একটি খিলি পান বিক্রির তালিকায় রয়েছে সর্বোচ্চ এক হাজার ৫৭৫ টাকা। সর্বনিম্ন ১০ টাকা পর্যন্ত।
সিদ্দিক কবিরাজ (৫৭) নাটোরের লালপুর উপজেলার জয়রামপুর-বেড়িলাবাড়ি গ্রামের মৃত গরিবউল্লার ছেলে। তিনি ৩৮ বছর যাবৎ ব্যবসা করলেও এই ঐতিহ্যবাহী ঈদ মেলায় ৩০ বছর যাবৎ খিলি পানের ব্যবসা করে আসছেন। হরেক রকম জর্দ্দা ও মসলা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন স্বাদের পান। বাহারি এই পান খেতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক আসেন সিদ্দিকের দোকানে।
সিদ্দিকের দোকানে পানের মূল্যের তালিকার মধ্যে নবাব পান ১৫৭৫ টাকা, জমিদার পান ১০৫০ টাকা, নাটোরের বনলতা পান ১৫৭৫ টাকা, আয়ুর্বেদিক পান ৯৯৫ টাকা, বিয়াই-বিয়ান পান ৮৮৫ টাকা, শালি-দুলাভাই পান ৭৭৫ টাকা, হাসি-খুশি পান ৫৫৫ টাকা, নতুন বাবুর হাতের পান ৪৪৫ টাকা, ভালোবাসার পান ৩৩৫ টাকা, বন্ধু-বান্ধবীর পান ২৫ টাকা ও জনতার পান ১০ টাকা।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ঝিনাইদহ থেকে মেলায় ঘুরতে এসে তিন বন্ধু ভালোবাসার ৩৩৫ টাকা মূল্যের তিনটি পান নেন।
এ সময় এই প্রতিবেদককে বলেন, এর আগেও তার কাছ থেকে পান খেয়েছি। তার পান খেলে মনে হয় মুখ থেকে পান ফুরাচ্ছে না। খেতে খুব স্বাদ।
এ বিষয়ে মেলায় ঘুরতে আসা মাসিক শিক্ষাতথ্য পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক তসলিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই মেলায় পান বিক্রি করে আসছেন সিদ্দিক কবিরাজ। তার পান খাওয়ার জন্য মানুষ লাইন নিয়ে থাকেন। বিক্রিও ভালো হয়।
অভাব-অনটনসহ অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা সিদ্দিককে বাধ্য করেছে পান বিক্রি করতে। বড় ধরনের ব্যবসা করতে মোটা অংকের পুঁজির প্রয়োজন। তার সাধ থাকলেও সাধ্যের বাইরে ছিল সেই স্বপ্ন। ১৯৮৭ সালে স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন এই খিলি পান বিক্রি। দীর্ঘ ৩৮ বছর পানের দোকান করে সিদ্দিক এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তিনি চলতি মেলায় ৬ দিনে প্রায় লাখের অধিক টাকার খিলি পান বিক্রি করেছেন।
সিদ্দিক চলতি মাসে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার পান বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে মেলায় ৬ দিনে প্রায় লাখের অধিক টাকার খিলি পান বিক্রি করেছেন। বিভিন্ন পণ্যের দামসহ যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয় তার।
সিদ্দিক কবিরাজ বলেন, আমি দেশের বিভিন্ন জেলায় পান বিক্রি করে বেড়াই। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা করি না। ভ্রাম্যমাণ হিসেবে এ ব্যবসা করে আসছি। যেখানে বড় বড় মেলা বা অনুষ্ঠান হয় সেখানে যাই। এভাবে দীর্ঘ ৩৮ বছর চলছে। আমার সাত ভাই বোনের মধ্যে আমি বড়। বাবা ১১ বছর আগে মারা গেছেন। বর্তমানে বৃদ্ধ মাসহ ৫ সদস্যের পরিবার পরিচালনা করতে কোনো বেগ পেতে হয় না।