
প্রিন্ট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
-67eeb04dcadc7.jpg)
আরও পড়ুন
চট্টগ্রামে ব্রাশফায়ারে দুজনকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- বান্দরবানের লামা উপজেলার রফিকের ছেলে বেলাল ও ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের আবুল হাশেমের ছেলে মানিক।
বুধবার রাতে বেলালকে চান্দগাঁও থানার খাজা রোড এলাকা থেকে আর মানিককে ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে বেলাল কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। এ মিশনে অংশ নিয়েছিল ১৩ জন। হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।
আরেক সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন বাবলা ছিল তাদের প্রধান টার্গেট; কিন্তু ব্রাশফায়ারে মৃত্যু হয় সারোয়ারের দুই সহযোগীর। পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে। ফুটেজে বেলালকে গুলি করতে দেখা যায়। গ্রেফতার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন স্বীকার করেছে ডাবল মার্ডারের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা। পরিকল্পিতভাবেই এ হত্যাকাণ্ড করা হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।
৩০ মার্চ গভীর রাতে প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা ধাওয়া করে প্রাইভেটকারে ব্রাশফায়ার করে দুজনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এতে আরও দুজন গুলিবদ্ধি হন। তারা হলেন- রবিন ও হৃদয়। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
বাকলিয়া থানা পুলিশ জানায়, ব্রাশফায়ারে দুজনকে হত্যার পরপরই ঘাতকদের গ্রেফতারে একাধিক টিম গঠন করা হয়। পুলিশের টিম রাজাখালী থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোডের চন্দনপুরা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পর তা পর্যালোচনা করে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতকদের চিহ্নিত করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে বাকলিয়া থানা পুলিশ কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া বেলালকে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় জড়িত মানিককে ফটিকছড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
কিলিং মিশনে মোট ১৩ জন সন্ত্রাসী ৬টি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এ পরিকল্পিত হামলা চালায়। তাদের মূল টার্গেট ছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা করা আরেক সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন বাবলাকে হত্যা করা। একই সঙ্গে সাজ্জাদের আধিপত্য খর্ব করে বায়েজিদ বোস্তামি ও আশপাশের এলাকায় নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।
প্রাইভেটকারে ব্রাশফায়ারে ২ জনকে হত্যার ঘটনায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে বাকলিয়া থানায় নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার পরই আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করে।
মামলার আসামিরা হলেন- ছোট সাজ্জাদ, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না, মোহাম্মদ হাছান, মোবারক হোসেন ইমন, খোরশেদ, রায়হান ও বোরহান। তবে মামলায় বেলাল ও মানিকের নাম ছিল না।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যা আছে: একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়- ৩০ মার্চ রাত ২টা ১৩ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে তিনটি মোটরসাইকেলে সাতজন সন্ত্রাসী বাকলিয়ার দিক থেকে চন্দনপুরা ঢাকাইয়া হোটেলের সামনে আসে। এর মধ্যে দুটি মোটরসাইকেল রংসাইড দিয়ে আসে। রাত ২টা ১৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে বেলালকে (ক্রিম কালারের গেঞ্জি পরা) গুলি করতে করতে সামনের দিকে যেতে দেখা যায়। এ সময় চারজনের হাতে ভারি অস্ত্র দেখা যায়। চারজনই একসঙ্গে গুলি করতে করতে বাকলিয়ার দিকে ফিরে যায়।
বাকলিয়ার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে বেলাল ও মানিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মোটরসাইকেল থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলিবর্ষণ করতে দেখা গেছে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও আমাদের টিম কাজ করছে।