
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০১ এএম
মারপিটের পর এক ব্যক্তির আত্মহত্যা, এএসআই বরখাস্ত

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ পিএম

বগুড়ার কাহালুতে পুলিশের মারপিটের শিকার হয়ে জাহিদুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে তাকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
বুধবার বিকালে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বগুড়ার কাহালু উপজেলার শেখাহার তেলিপাড়ার আহম্মেদের ছেলে জাহিদুল ইসলাম একাধিক বিয়ে করেন। কিছুদিন আগে তৃতীয় স্ত্রী বরিশালের আঁখি তাকে তালাক দেন। এরপর ওই নারী কালাই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর (ইউপি সদস্য) পিলকুঞ্জ ঝাঁঝরপাড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে জাহিদুল তার বউকে ফেরত চেয়ে আসছিলেন। নাসির উদ্দিন রাজি না হওয়ার তার সঙ্গে জাহিদুল ইসলামের সম্পর্ক খারাপ হয়।
এ অবস্থায় জাহিদুল ইসলাম গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন দুপুরে নাসির উদ্দিনের বাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি (জাহিদুল) সাবেক স্ত্রী আঁখির সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। এ সময় বিষয়টি মীমাংসার জন্য নাসির উদ্দিন কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেনকে ডেকে বাড়িতে আনেন। এরপর জাহিদুল ইসলাম মারপিটের শিকার হলে তিনি বাড়িতে ফিরে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। স্বজনরা টের পেয়ে প্রথমে তাকে পার্শ্ববর্তী দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এদিকে সাবেক মেম্বার নাসির উদ্দিনের বাড়িতে জাহিদুল ইসলামকে কাহালু থানার এএসআই বেলাল হোসেন মারপিট করেছেন এবং এ কারণে তিনি (জাহিদুল) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা প্রথমে এএসআইকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই বেলাল হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাহালু থানার ওসি আবদুল হান্নান জানান, সাবেক মেম্বার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে জাহিদুল ইসলামের পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। গরু চুরির ঘটনায় জাহিদুল ওই সাবেক মেম্বারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছেন। সর্বশেষ জাহিদুলের তৃতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করায় তার সঙ্গে নাসিরের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। তিনি বউ ফেরত চেয়ে আসছিলেন। ঈদের দিন দুপুরে জাহিদুল তার সাবেক স্ত্রী আঁখির সঙ্গে দেখা করে তাকে ফিরে আনতে নাসিরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে জাহিদুল হট্টগোল করায় নাসির এএসআই বেলাল হোসেনকে বাড়িতে ডেকে এনেছিলেন। এ সময় জাহিদুলকে মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি তালাক দেওয়া বউ ফেরত না পেয়ে মনের দুঃখে বাড়িতে এসে গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছেন। এর সঙ্গে এএসআই বেলাল হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ অন্যায়ভাবে তাকে দোষারোপ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।