
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৩ এএম
লালমাইয়ে নীড়ে ফেরা স্মৃতির টানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা

লাকসাম-মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম

আরও পড়ুন
‘নীড়ে ফেরা স্মৃতির টানে, মিলি প্রীতির বন্ধনে’ এ স্লোগানে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের ৪র্থতম পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে।
বুধবার হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সকাল ৮টায় বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়। পরে আনন্দ র্যালি শেষ করে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়।
এটি ৪র্থতম পুনর্মিলনী উদযাপন। এ বর্ণিল আয়োজনে প্রায় ৩০ হাজার সাবেক-বর্তমান ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও পিনাকী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং প্রাক্তন ছাত্র মজুমদার জুয়েল, ডা. আশিকুর রহমান ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক ডা. সালেহ আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন, প্রধান সমন্বয় প্রকৌশলী আবদুল বারী।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল হক চৌধুরী।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- রেক্স ফ্যাশন লি. ও কে আলী নিটওয়ার লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কোরবান আলী, বাংলাদেশ বেতার প্রধান প্রকৌশলী ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির প্রকাশনা মুনীর আহমেদ, নিবন্ধন এবং অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক মাহবুবুর আলম খোকন, এইচ এমএস গ্রুপের চেয়ারম্যান হাজী শাহজাহান, পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের প্রকাশনা পরিষদের উপদেষ্টা প্রফেসর আবুল খায়ের।
এতে উপস্থিত ছিলেন- এনাম মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মোতাহার হোসেন জুয়েল, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) জাফর ইকবাল, যুগ্মসচিব (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, দে এন্ড কোং চট্টগ্রাম হারাধন দে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান প্রমুখ।
জানা যায়, ডাকাতিয়া নদীর কোল ঘেঁষে ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে পথচলা শুরু করে ২০২৫ সালেও সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ৭৬ বছরের এই বিদ্যাপীঠ। আপন আলোয় আলোকিত আজ উপজেলায়, জেলায় ও বিশ্ব মাঝে। ১৯৫২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশের মধ্য দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও অর্জনের পথচলার শুভ সূচনা হয়।
১৯৬৬ সালে কুমিল্লা বোর্ডে বাণিজ্য বিভাগে মেধা তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান দখল করার পর থেকে এ বিদ্যালয়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন স্বর্গীয় বাবু মহিম চন্দ্র সাহা। পরবর্তীতে মকবুল আহমেদ বিএসসি, বিটি ১৯৫০ সালে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুলে যে মশাল প্রজ্বলিত করেছেন তা আজও স্ব-মহিমায় দীপ্তিমান।
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মরহুম মকবুল স্যারের লেখা বই থেকে জানা যায়, খলিলপুর গ্রামের বাবু ভগবান চন্দ্র সাহা ও বাবু ঈশ্বর চন্দ্র সাহা ৩০ শতাংশ জমি দান করায় এই জমির উপর ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে একটি মাইনর স্কুল স্থাপিত হয় এবং নামকরণ করা হয় হরিশ্চর মধ্য ইংরেজি স্কুল। অতঃপর ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ভূমির পরিমাণ ৩.৫১ একর। হরিশ্চর নামটি প্রসিদ্ধ হওয়ার একমাত্র কারণ হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুল। যুগ যুগ ধরে সাফল্যের দ্যুতি ছড়িয়েছে সুদূর মার্কিন মুল্লুকের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) ও হালের ইনটেল কর্পোরেশন পর্যন্ত।