
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৮ এএম
বাবা ও সৎমায়ের নির্যাতনে কলেজ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৯ এএম

আরও পড়ুন
মানিকগঞ্জ নার্সিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাবা ও সৎমায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত ইভা আক্তার (২২) নামের ওই কলেজ শিক্ষার্থী সদর উপজেলার কাটিগ্রাম ইমামনগর গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের মেয়ে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর নিজ বসতঘরে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ ও ভুক্তভোগীপরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ইসরাফিল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর থানা পুলিশ হেফাজতে আটক রাখা হয়েছে।
নিহত ইভা আক্তারের ছোট ভাই শুভ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা ইসরাফিল হোসেন সাত-আট মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই সে আমার মা, বোন এবং আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। ঈদের দিন আমার বাবা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর আমার বাবা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে মা ডাকার জন্য আমাকে এবং আমার বোনকে চাপ দিতে থাকে। কিন্ত আমার বোন মা ডাকতে অস্বীকৃতি জানালে আমার বাবা ও সৎমা দুজনে মিলে আমার বোনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমার বোনের চরিত্র নিয়েও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে আমাকে এবং আমার বোনকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর আমাদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে। আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত না চাইলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
শুভ আহমেদ আরও বলেন, আমার বাবা এবং সৎমায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার বোন সন্ধ্যার পর নিজের রুমে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসি। এর পর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সসহ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য শাবলু মিয়া বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক ওই মেয়েটির মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই তার বাবা ও চাচা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিহতের বাবা ইসরাফিল হোসেনকে সদর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে মেয়েটির চাচা চান্দু মোল্লা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। মেয়েটির দাদি খোদেজা বেগমও পালিয়ে গেছেন বলে শুনেছি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এসএম আমান উল্লাহ বলেন, শুনেছি পারিবারিক কলহের জেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে আটক রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।