দুই ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণের পরিকল্পনাকারী কনস্টেবল গ্রেফতার
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ার ধুনটে দুই ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনাকারী রাজশাহী মেট্রোপলিটন (আরএমপি) ডিবি পুলিশের কনস্টেবল ওহাব আলী (২৮) অবশেষে ধরা পড়েছেন। ধুনট থানা পুলিশ সোমবার রাতে তাকে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে এক সাব-ইন্সপেক্টরসহ পাঁচ পুলিশ ও এক গাড়ি চালককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মামলা সূত্র ও পুলিশ জানায়, কনস্টেবল ওহাব আলী বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। তার নিজ গ্রামের সেলিম শেখের ছেলে রাব্বি শেখ (১৯) ও একই গ্রামের মৃত শেরবান খাঁয়ের ছেলে জাহাঙ্গীর খাঁ (২৪) ফ্রিল্যান্সার। কনস্টেবল ওহাব এদের দুজনকে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী হিসেবে অবিহিত করেন। তিনি সহকর্মীদের সাথে এদের দুইজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেন।
আরএমপি ডিবি পুলিশের এসআই শাহীন মোহাম্মদ অনু ইসলামের নেতৃত্বে কনস্টেবল ওহাব আলী, কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী ও সিভিল মাইক্রো ড্রাইভার মেহেদী হাসান ২৩ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাইক্রোবাসে বগুড়ার ধুনটের দীঘলকান্দি গ্রামে আসেন। তারা ফ্রিল্যান্সার রাব্বি ও জাহাঙ্গীরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। রাত ২টার দিকে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের শেরপুর উপজেলায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাদের সদস্যরা বিষয়টি ধুনট থানা ও হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানাকে অবহিত করেন।
এদিকে পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামানের নেতৃত্বে টহল পুলিশ বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের বীরগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ধাওয়া করে মাইক্রোবাসটি থামায়। এরপর আরএমপি ডিবি পুলিশের এসআই শাহীন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল ওহাব আলী, কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী ও সিভিল মাইক্রো ড্রাইভার মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে কনস্টেবল ওহাব আলী সটকে পড়েন। তাদের কাছে চাঁদাবাজির দুই লাখ টাকা, একটি ওয়াকিটকি একটি হ্যান্ডকাপ ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রাব্বির বাবা সেলিম শেখ ধুনট থানায় ছয় পুলিশ সদস্য ও গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় মামলা করেন। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ অপরাধে জড়িত থাকায় আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান সোমবার বিকালে পাঁচ ডিবি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
বগুড়ার ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, অপরাধে জড়িত থাকায় আরএমপি ডিবি পুলিশের কনস্টেবল ওহাব আলীকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে।
