
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম
স্কুলছাত্রী ধর্ষণের দায়ে যুবক গ্রেফতার

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম

আরও পড়ুন
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালজানা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় মানসিক হাসপাতালে রেফার্ড করেছে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক।
গ্রেফতার হওয়া যুবক ওই এলাকার আজিজ খাঁর ছেলে।
আদালতে দাখিলকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া আসার সময় আসামি হৃদয় রাস্তাঘাটে ভিকটিমকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। এতে কোনো সাড়া না পাওয়ায় ১৩ মার্চ রাতে ওই স্কুলছাত্রী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে টয়লেটে যাওয়ার সময় ওতপেতে থাকা হৃদয় ওই স্কুলছাত্রীর মুখে চেতনানাশক ছিটিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে ওই স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে গেলে ১৯ মার্চ তাকে নিয়ে হৃদয় বাড়ি আসে। পরে হৃদয়ের ভাই ওই স্কুলছাত্রীকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন।
ভিকটিমের বড় ভাই মামলার বাদী বলেন, হৃদয় আমার বোনকে ফেরত দেওয়ার পর প্রথমে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। পরে সেখান থেকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কয়েক দিন ভর্তি থাকার পর বোনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে জাতীয় মানসিক হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। বিষয়টি শিবালয় থানা পুলিশে জানানো হলে তারা কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে কোর্টে মামলা করা হয় বলে জানান তিনি।
ভিকটিমের মা বলেন, ৫ মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। ওদের বাবা মারা গেছে বহু আগে। অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। ওই মেয়েটা সবার ছোট। আমার ছেলে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে বিবিএ পড়ে। এর পাশাপাশি একটি এনজিওতে চাকরি করে। ওই টাকায় সংসার চলে; কিন্তু এর মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে গেল। ঢাকায় নিয়ে মেয়েকে চিকিৎসা করার মতো কোনো টাকাও নেই। তার মেয়ের এ অবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তির সর্ব্বোচ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সুজন হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়ে ২৩ মার্চ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে মিস পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে অভিযোগটি এফআইআর করার নির্দেশ দিলে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি হৃদয়কে গ্রেফতার করে। এতে ভিকটিম ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয় এবং সেই সঙ্গে ভিকটিমের পক্ষে বিনা খরচে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ওই আইনজীবী।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভিকটিমকে ধর্ষণের বিষয়টি শিকার করেছেন। এ ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।