
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
রাণীনগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে রোগীর ভোগান্তি

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম

আরও পড়ুন
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, তিনজন মেডিকেল অফিসার, একজন ডেন্টাল সার্জন ও একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন।
৫০ শষ্যা বিশিষ্ট এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের মোট ২৮ পদের মধ্যে ২২ পদই শূন্য। পদগুলোর মধ্যে মেডিকেল অফিসার ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তালিকা লম্বা। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারণে একদিকে যেমন চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাবাসির চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে ৩১ শয্যা রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হয়। এরপর ২০১২ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করা হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২৮টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে ২২ পদে নেই চিকিৎসক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, তিনজন মেডিকেল অফিসার, একজন ডেন্টাল সার্জন ও একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা।
মেডিকেল অফিসার ১৫ পদের মধ্যে নেই ১২ জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন মাত্র একজন (শিশু বিশেষজ্ঞ)। শূন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদের মধ্যে সার্জারি, অ্যানাসথেসিয়া, মেডিসিন, চক্ষু, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক্স, গাইনি, কার্ডিওলজিসহ ১০ পদে নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
মঙ্গলবার সরেজমিন জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রতিদিন প্রায় ৩শ থেকে ৪শ বিভিন্ন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, তিনজন মেডিকেল অফিসার, একজন ডেন্টাল সার্জন, একজন বিশেষজ্ঞ ও উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীরা। রোগীর ভিড়ে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আবার বিভিন্ন পদে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন অনেক রোগী। হস্তান্তর করা হচ্ছে বিভিন্ন মেডিকেলে।
চিকিৎসা নিতে আসা একরাম সরদার নামে এক কিশোর বলেন, আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ ঠাণ্ডা লেগে গলা ব্যথা শুরু হয়। কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের কাছে সেবা নিয়ে ভালো হয়নি। তাই আবার হাসপাতালে আসি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর জন্য; কিন্তু হাসপাতালে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ না থাকায় বাধ্য হয়ে নওগাঁতে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়েছে।
শিখা বিবি বলেন, আমার সমস্যার কারণে ৮ কিলোমিটার দূর থেকে উপজেলা হাসপাতালে যাই। এরপর সেখানে জানতে পারি হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক নেই। পরে এক মেডিকেল অফিসারের কাছ থেকে ওষুধ লিখে নিয়ে বাড়ি চলে আসি।
রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খান বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। শূন্য পদে এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক পাইনি।
তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকট থাকলেও কষ্ট করে আমরা রোগীদের সেবা দিয়ে আসছি। চিকিৎসক সংকটের সমস্যা সমাধান হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাণীনগর উপজেলাবাসী আরও ভালো চিকিৎসাসেবা পাবেন।