
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭ পিএম
পবিপ্রবিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

দুমকি দক্ষিণ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম

আরও পড়ুন
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসন বিভিন্ন পদে ৯ জনকে অবৈধ দৈনিক মজুরি ভিত্তিক খন্ডকালীন নিয়োগ দিয়েছে।
সূত্রমতে, পূর্বানুমোদন ছাড়া দৈনিক মজুরিভিত্তিক জনবল নিয়োগ বন্ধ রাখার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিপত্র থাকলেও পবিপ্রবি প্রশাসন তা অমান্য করেছে। গত ২৭ জানুয়ারি ষষ্ঠ গ্রেডের সহকারী অধ্যাপক পদে ড. মো. ইকবাল হোসেন, ড. মো. সগিরুল ইসলাম মজুমদার; নবম গ্রেডের প্রভাষক পদে ডা. মো. মহিবুল্লাহ, ষষ্ঠ গ্রেডের সহকারী রেজিস্ট্রার পদে আবু তাহের, সুইন আহমেদ, মো. মাহমুদ আল-জামান, লোকমান হোসেন (মিঠু), সহকারী পরিচালক পদে মাহমুদ হোসাইন এবং নবম গ্রেডের সেকশন অফিসার পদে এস এম মেহেদী হাসানকে দৈনিক বেতনে খন্ডকালীন নিয়োগ দিয়েছেন। জানা গেছে, নিয়োগ পাওয়া এই ৯ জনের কেউই জুলাই বিপ্লবে শহিদ ও আহত পরিবারের সদস্য নন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুলাই বিপ্লবে শহিদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মাত্র একজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— জুলাই বিপ্লবে শহিদ পরিবার থেকে একটিমাত্র নিয়োগ এবং উচ্চপদে ৯ টি অবৈধ নিয়োগের অনুপাত দেখে আমরা অবাক হয়েছি।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় তারুয়া তন্ময়ের বোন মিতু তারুয়াকে লাইব্রেরি অ্যাটেনডেন্টের ২০ তম গ্রেডের পদে ২০২৪ সালের ২৪ অক্টোবর অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয় পবিপ্রবি প্রশাসন। আর কাউকে শহিদ পরিবার থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একাংশ।
গত ১১ মার্চ পবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মিয়া রাসেল এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক জনি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নতুনদের মধ্যে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পাওয়া ড. সগিরুল ইসলাম মজুমদার আওয়ামী লীগের একজন দোসর। তিনি এর আগে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে থাকাঅবস্থায় ১৫ আগস্ট, ১৭ মার্চ সহ বিভিন্ন আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এগুলোর উদযাপন কমিটিতেও তার নাম ছিল। সর্বশেষ জুলাই বিপ্লব চলাকালে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সগিরুল ইসলাম মজুমদার ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখুন’- লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে র্যালি করেছেন।
তবে সগিরুল ইসলাম মজুমদার নিজেকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক (জাহাঙ্গীর-নোমান কমিটি) বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি যা করেছি আমার পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাকরি বাচাঁনোর জন্য করেছি এবং আমি জুলাই আগষ্টে ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পবিপ্রবি প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি, তাদের উত্তর সন্তোষজনক না হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।