ধর্ষণের শিকার প্রবাসীর স্ত্রীর সন্তান প্রসব, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার
ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফরিদপুরের সালথায় ধর্ষণের শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী (২২) কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন। আর সন্তান প্রসবের আগে ও পরে থেকেই বিপাকে রয়েছে ধর্ষিতার পরিবার। তাদের কোণঠাসা ও অনেকটা একঘরে করে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি জেনে প্রবাসী স্বামী ওই স্ত্রীকে ঘরে তুলবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। থানায় মামলা হলেও অধরা অভিযুক্ত ব্যক্তি।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন সন্তানের জনক উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ছোট বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আরব আলী (৩৯)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে ২০২৪ সালের ২২ মে তিনি ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত ধর্ষক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় বর্তমানে ধর্ষিতার পরিবার একঘরে অবস্থায় আছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর পরিবারের ভাষ্যমতে, গত চার বছর আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তরুণীর স্বামী তাকে বাবার বাড়িতে রেখে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এরপর ওই তরুণীর ওপর কুনজর পড়ে আরব আলীর। এরপর সুযোগ বুঝে ২০২৪ সালের ২২ মে আরব আলীর বাড়িতে একা পেয়ে ওই তরুণীকে তার স্ত্রী (চাচি) ডাকছে বলে খবর দেয়। চাচার বাড়িতে গেলে তাকে ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই তরুণী চিৎকার দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়, ভয়ে চুপ থাকে তরুণী।
তবে মেয়ের শরীরের পরিবর্তন দেখে তরুণীর পরিবার তাকে এ বিষয়ে চাপ দিলে সে সব কিছু খুলে বলে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথাবার্তা হয়; কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো সালিশ বৈঠক মানেন না। এরপর পরিবারসহ ওই তরুণী আরব আলীর বাড়িতে গেলে তরুণীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলে এবং বিভিন্ন হুমকি দেয়।
এদিকে প্রবাসী স্বামী বিষয়টি জেনে তার স্ত্রীকে আর গ্রহণ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপরই তরুণীর মা বাদী হয়ে সালথা থানায় একটি মামলা করেন। তবে এখনো অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
ধর্ষিতা তরুণীর মা বলেন, আমার স্বামীকে কোথাও কোনো কাজে নিচ্ছে না, মেয়ের সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে আমরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি। বিচারের দাবিতে অনেক জায়গায় ঘুরেও কোনো বিচার পাইনি। উল্টো আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলতে বলেছে। এর আগেও আরব আলী একাধিক নারীর সর্বনাশ করেছে। বর্তমান সরকার প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার ও পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. আরব আলী বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা করে যদি আমার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাহলে আমার যে বিচার হয় তা আমি মেনে নেব।
সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। মেয়েটি কন্যাসন্তান প্রসব করেছে বলে জানতে পেরেছি। আসামি গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
