
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১০ এএম
স্কুল স্থানান্তরের প্রতিবাদে সাটুরিয়ায় মানববন্ধন

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

আরও পড়ুন
সাটুরিয়া উপজেলার ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পাশে স্থানান্তরের প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবিদ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন মুয়াজ্জেম হোসেন তোলা মাস্টার।
এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন, ১নং যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আজাদ বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মহসিন উজ্জামান, যুবদলের সদস্য সচিব মো. ফরিদ, বরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান স্বপন, বিদ্যালয়ের জমিদাতা মিজানুর রহমান ও আব্দুল মজিদসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, বরাইদ ইউনিয়ন ধলেশ্বরী নদী দ্বারা বিভক্ত এবং এর বেশির ভাগ এলাকা চরাঞ্চল। ২০১৫ সালে স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়টি চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার সুযোগ তৈরি করেছে।
তবে কিছু ব্যক্তি, বিশেষত মো. শাজাহান ও আব্দুল সালাম, বিদ্যালয়টি নদীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পাশে স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টির সুবিধাভোগী পাঁচটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্থানান্তরিত হলে মাত্র একটি ওয়ার্ডের আংশিক মানুষ উপকৃত হবে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিদ্যালয়ের জন্য পশ্চিম পাশে জমি কিনে নতুন একাডেমিক ভবন তৈরির পরিকল্পনা করছে।
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার বলেন, যেখানে বিদ্যালয়টি নিতে চাচ্ছে, সেখানে একটি বাজার রয়েছে। সেখানে গেলে বখাটেদের উৎপাতের শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে। এছাড়া আমাদের নদী পার হতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ ও কষ্টদায়ক। বিদ্যালয়টি এখানে থাকলেই আমাদের জন্য ভালো হবে।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ জানান, বিদ্যালয় স্থানান্তর রোধে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা (মামলা নং- ২১/২০২৫) করা হয়েছে। মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও একটি পক্ষ জোরপূর্বক বিদ্যালয় স্থানান্তরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আসাউদ জামান জানান, কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল, যা পরিদর্শন কমিটি যাচাই করে সত্যতা পেয়েছিল। পরবর্তীতে বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও ডিজি অফিস থেকে চিঠি আসে। তবে এখন স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে রাখতে চাচ্ছেন এবং এ নিয়ে মামলা করেছেন। এখন আদালত ও মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে বিদ্যালয় কোথায় থাকবে।
প্রতিবাদ সভা শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী অংশ নেন।