
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
নওগাঁয় মোকামে সরু চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৪ পিএম
-67dd84b208432.jpg)
আরও পড়ুন
দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে দেশে উৎপাদিত সরু চালের দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর খুচরায় বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। সরু চাল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। তবে দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে মোটা চালের দাম। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল (জিরা) ও কাটারিভোগ (কাটারি) ধানের আমদানি বর্তমানে বাজারে নেই বললেই চলে। চাহিদার তুলনায় সামান্য ধান আমদানি হচ্ছে, তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। স্থানীয় বাজারে দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধানের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ধানের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের দামও বেড়েছে।
ধান-চাল উৎপাদনে প্রসিদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত নওগাঁয় চালের দাম বাড়লে বা কমলে সারা দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ে। নওগাঁর সবচেয়ে বড় চালের মোকাম শহরের আলুপট্টি এলাকার বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে যায়, বিভিন্ন মিল গেটে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা জিরাশাইল ও কাটারিভোগ চালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পাইকারিতে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। এক সপ্তাহ আগে মানভেদে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) জিরাশাইল চালের দাম ছিল ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা।
বর্তমানে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৮৫০ টাকা। একইভাবে কাটারিভোগ চালের প্রতি বস্তা এক সপ্তাহ আগে ৩ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা চালের বাজার দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।
প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) স্বর্ণা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। রণজিত ও ঊনপঞ্চাশ জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ও কাটারিভোগ চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে। এছাড়া প্রতি কেজি কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। প্রায় দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল থাকা মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণা চাল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি ঊনপঞ্চাশ ও রণজিত চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি দরে। এই চালের বাজারদর এক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পাইকারিতে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে চাল কিনে ক্যারিং (পরিবহণ) খরচ, দোকান ভাড়া ও কর্মচারীর খরচ যোগ হয়ে খুচরায় আমাদের প্রতি কেজি জিরা ও কাটারি চাল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পাইকারিতে মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, শুধু দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কারণ জিরা ও কাটারি ধান বর্তমানে শর্ট আইটেম। বাজারে কাটারি ও জিরা ধানের আমদানি নেই। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমে যাওয়ায় প্রতি মণ (৪০ কেজি) জিরা ও কাটারি ধানের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এ কারণে পাইকারিতে দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চাল ও দেশে উৎপাদিত মোটা চালের বাজারদর স্থিতিশীল রয়েছে।