জামিনে মুক্তি পেয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ইসরাত জাহান শিরীন।

এর আগে বুধবার একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার আসামিকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে মেয়ে সারজিনা মিমসহ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ওই দিনই তাদের আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে পাথরঘাটা উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় জেলা মহিলা দলসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইসরাত জাহান শিরীন বলেন, গত ১১ মার্চ বরগুনা থানায় মেয়ের জামাই মো. সোহানের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ১৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে বরগুনা থানার এসআই সাইদুর ফোন দিয়ে বলেন- জামাই সোহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ খবর শুনেই তাৎক্ষণিক আমার মেয়ে সারজিনা মিম ও তার দুই বছরের বাচ্চা এবং আমার বোনের ছেলে অনিককে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই। এ সময় আমার মেয়ের জামাইকে একটু পরে থানার হাজতে নেওয়ার জন্য এসআই সাইদুলকে অনুরোধ করি। এছাড়াও আমার মেয়ে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে তার স্বামীর কাছে ছুটে যেতে চাইলে মেয়েকে বাধা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। পরে মহিলা পুলিশ ডেকে আমাদের থানা থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বলা হয়। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ওসি দেওয়ান জগলুল হাসানসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা মোবাইলে আমাদের ছবি ধারণ করেন। এছাড়াও আমাকে উদ্দেশ্য করে- নোটি রাস্তার মহিলা বলে গালাগালি করেন। এ সময় আমি প্রতিবাদ করি এবং আমি বাজে মহিলা নাকি দলীয় লোকজনদের কাছে আমার বিষয়ে তাদের খোঁজ নিতে বলি। তবে ওসি তা না করে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম উল্লেখ করে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলার একপর্যায়ে আমাকে গ্রেফতারের কথা বলেন। পরবর্তীতে আমি ও আমার মেয়ে সারজিনা মিমের বিরুদ্ধে ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশের সরকারি কর্তব্য-কাজে বাধা প্রদান উল্লেখ করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। 

এ ঘটনার বিচার দাবি করে ইসরাত জাহান শিরীন বলেন, পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হয়েছি আমি। বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জের এমন কার্যকলাপের ঘটনায় আমার মানসম্মান ক্ষুণ্ণসহ আমার দলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি ও আমার মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা থেকে পরিত্রাণ চাই। এছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিচারের দাবি জানাই। 

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী এবং বরগুনার নারী ও শিশু আদালতের পিপি রঞ্জু আরা শিপু বলেন, শিরীনের সঙ্গে খারাপ আচরণের খবর শুনে আমি থানায় যাই। পরে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য একটি মুচলেকা দিয়ে তাদের নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে ওসিকে অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হননি। এছাড়াও তাদের সঙ্গে যাতে কেউ দেখা করতে না পারেন সেই নির্দেশনাও দেন তিনি। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠালে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। শিরীনের সঙ্গে যা হয়েছে এতে আমাদের মহিলা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।