২২ বছর পর সচল খালেদা জিয়ার উপহারের অ্যাম্বুলেন্স

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৫১ পিএম

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০৩ সালে একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সম্মানসূচকভাবে অ্যাম্বুলেন্সটিতে লেখা ছিল ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপহার-২০০৩’।
উপহার পাওয়ার পর থেকেই অ্যাম্বুলেন্সটি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবহৃত ছিল। ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন অ্যাম্বুলেন্সটিকে মূল ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে বরিশাল ক্যাম্পাসে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে থাকা একটি হলের নাম পরিবর্তন করে শেরেবাংলা হল নামকরণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর বরিশাল ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটির করুণ অবস্থা দেখে মর্মাহত হন। তিনি পরিবহণ কর্মকর্তাকে দ্রুত এটি সংস্কার করে সচল করার নির্দেশ দেন।
উপাচার্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত শেষে ১৮ মার্চ পুনরায় ক্যাম্পাসের চিকিৎসাসেবায় যুক্ত হয়। একইসঙ্গে হলের নাম পুনরায় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হল করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী সোহেল রানা জনি ও তানভীর আহমেদ খান বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি এতদিন অবহেলায় পড়ে থাকায় আমাদের খুব খারাপ লেগেছে; কিন্তু উপাচার্য স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এটি সচল হওয়ায় আমরা আনন্দিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মো. কামাল হোসেন জানান, অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন, পাওয়ার, চাকা, বডি ও লাইটসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ মেরামত করা হয়েছে। এখন এটি আগের মতোই কার্যকর।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইমাদুল হক প্রিন্স ও সহকারী রেজিস্ট্রার রিয়াজ কাঞ্চন শহীদ বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের মানবিক উদ্যোগে ক্যাম্পাসের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত হলো। শিক্ষার্থীদের জরুরি সেবায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের সুদক্ষ নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজট-মুক্ত, মাদকমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সটি পুনরুজ্জীবিত হওয়া আমাদের সম্পদের যথাযথ সংরক্ষণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বেগম খালেদা জিয়ার উপহার অ্যাম্বুলেন্সটি পুনরায় চালু করতে পেরে আমি গর্বিত। এটি চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পদ রাজনৈতিক কারণে অবহেলিত হওয়া উচিত নয়। ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য পরিত্যক্ত স্থাপনা ও সম্পদ পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, এটাই প্রকৃত নেতৃত্ব।