Logo
Logo
×

সারাদেশ

গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দিল মানবপাচারকারী

Icon

টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:২২ পিএম

গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দিল মানবপাচারকারী

মাদারীপুরের রাজৈরে গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দিল মানবপাচারকারী বিকাশ বেপারী ও তার লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উল্লাবাড়ী গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে ঘটনাটি কয়েক দিন আগে ঘটলেও প্রকাশ পেয়েছে বুধবার। এলাকার প্রভাবশালীরা এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নির্যাতিত মহিলাকে এলাকা ছাড়া করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে ক্রমেই বেরিয়ে আসছে নির্যাতনের ভেতরের বহু কাহিনী। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, রাজৈর উপজেলার উল্লাবাড়ী গ্রামের কালীচরন বেপারীর ছেলে মানবপাচারকারী বিকাশ বেপারী ও  পার্শ্ববর্তী শ্যামল মণ্ডল পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এক সময় উভয় পরিবারের সদস্যরা কথিত গুরু মিঠুনের কাছে দীক্ষা নেন। সেই সুবাদে উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।

এদিকে বিকাশের কলেজপড়ুয়া মেয়েকে বশ করে ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার ও প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে শ্যামলের ঘরে রাখে। এরপর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাশের মেয়ে, শ্যামল ও কথিত গুরু মিঠুন উধাও হয়ে যান। এ ঘটনা টের পেয়ে বিকাশ বেপারী ১ মার্চ রাজৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর বিকাশ ও তার লোকজন সন্দেহবশত শ্যামলের স্ত্রী সোনালী মণ্ডলকে ধরে এনে আটকে রেখে বেধড়ক মারপিট শেষে ব্লেড দিয়ে মাথার চুল কেটে দেন।

নির্যাতনের একপর্যায়ে সোনালী টাকা ও স্বর্ণালংকার তার ঘরে রয়েছে বলে স্বীকার করেন এবং নিজ ঘর থেকে ওই টাকা ও স্বর্ণালংকার বের করে দেন। এরপর বিকাশ ও তার লোকজন সোনালীকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে সে লাপাত্তা হয়ে যায়।     

কয়েক দিনের বিশেষ অনুসন্ধানে ওই নির্যাতিত নারীর অভিযোগের একটি ভিডিও সাংবাদিকদের হাতে আসে এবং সেই ভিডিওতে ভুক্তভোগীর অভিযোগে জানা যায়, মূলহোতা মানবপাচারকারী বিকাশ বেপারী ও বাসু বাড়ৈর হুকুমে খিরত বাড়ৈ, অসিত বৈরাগীসহ কয়েকজন তাকে বেধড়ক মারপিট করে এবং স্বপ্না নামে এক নারী ব্লেড দিয়ে তার মাথার চুল কেটে ফেলে। পরে অভিযুক্তরা তাকে তার নিজ বাড়িতে দিয়ে আসে এবং এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিকাশ বেপারীর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা কালীচরন বেপারী বলেন, আমার ছেলে ঢাকায় চলে গেছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা ব্যাস রায় জানান, মেয়েটির মানসম্মান রক্ষার্থে উভয় পরিবারের মধ্যে আপস-মীমাংসা হয়ে গেছে। নির্যাতিত ওই নারী কোথায় আছেন জানি না।

কদমবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস জানান, ঘটনা জেনেছি। তবে তারা উভয়পক্ষ সালিশ বৈঠক করে মীমাংসা হয়ে গেছেন। 

রাজৈর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস রায় জানান, জিডির সূত্র ধরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তবে বিকাশের মেয়েটি ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুল হক জানান, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম