বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি: দুজনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম

বগুড়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে সহায়তা করে সরকারি ৯ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ফায়ার ফাইটারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান তদন্ত শেষে সম্প্রতি বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ চার্জশিট দেন।
দুদকের পিপি এসএম আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার বিকালে এ তথ্য দিয়েছেন।
মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার খিতাবেরপাড়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ও নয়াপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটার ফরহাদ হোসেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের রাশেদা খাতুন ও মোর্শেদা খাতুন নামে দুই মেয়ে সন্তান রয়েছেন। ছেলেসন্তান না থাকার পরও তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের সন্তানকে নিজ সন্তান পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিভিন্ন পদে চাকরি পেতে সহায়তা করেন।
তিনি মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে জালিয়াতি করে তার চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেনকে নিজের সন্তান পরিচয় দেন। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট তাকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটার পদে চাকরি পেতে অবৈধভাবে সহায়তা করেন।
ফরহাদ হোসেন ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে তার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিষয়টি ফাঁস হয়। এ নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দুদকের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করা হয়।
এরপর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে বগুড়া কার্যালয়ের কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম গত বছরের ৩০ জানুয়ারি নিজ কার্যালয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
দুদক বগুড়া কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান জানান, সোনাতলা উপজেলার খিতাবেরপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের নিজের ছেলেসন্তান নেই। তিনি আত্মীয়-স্বজনের তিন ছেলেকে নিজের সন্তান সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অবৈধভাবে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশে চাকরি দেন।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে কমন রেখে তিনি কথিত সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়। তদন্ত শেষে এর আগে একটি মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৯ মার্চ তিনি দ্বিতীয় মামলায় অবৈধভাবে চাকরি দিয়ে সরকারের ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭০৫ টাকা ৩০ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার কথিত সন্তান ফায়ার ফাইটার ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ শাহজাহান কবিরের আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন। তৃতীয় মামলার তদন্ত চলছে। শিগগিরই সেই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।
দুদক বগুড়ার পিপি এসএম আবুল কালাম আজাদ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এখন আদালত সেটি আমলে নিবেন। এরপর পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারির আদেশ হবে।