
বগুড়ায় পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। দুই নেতার ওপর হামলায় জড়িতদের তিনদিনের মধ্যে গ্রেফতারে প্রশাসনের আশ্বাসের পর বুধবার দুপুর ১টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে তারা। এর আগে সকাল থেকে বগুড়া থেকে জেলাটি থেকে সারাদেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু এ তথ্য
দিয়েছেন।
মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের দুই নেতার ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার সকালে বগুড়া
শহরের স্টেশন রোডে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সেখান থেকে পরিবহণ বন্ধের ঘোষণা দেন বগুড়া মোটর
শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপাতি আবদুল হামিদ মিটুল। এরপর মোটর শ্রমিকরা প্রথমে অটোরিকশা চলাচল
বন্ধ করে দেয়।
বিক্ষুব্ধ মোটর শ্রমিকরা স্টেশনে রোডে কয়েকটি নারিকেল দোকানে হামলা চালায়।
ভাঙচুর করে দোকানগুলোতে আগুন দেয় তারা। বিক্ষোভ ও দোকানে আগুনের ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত
হয়ে উঠলে সেনা সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া শহরের স্টেশন রোডে মিতালী ফিলিং স্টেশনের
পাশে নারিকেল ব্যবসায়ীদের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের সামনে সিএনজি চালিত অটোরিকশা রাখা
হয়। অটোরিকশা চালকরা ওই স্থানটিকে স্ট্যান্ড করে যাত্রী ওঠানো-নামানো করেন। এতে ব্যবসায়ীদের
ক্ষতি হলে মঙ্গলবার বিকালে অটোরিকশা রাখতে বাধা দেন। তখন অটোরিকশা চালকরা বগুড়া মোটর
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের খবর দেন।
মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর চড়াও হন। এ
সময় নারিকেল ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এতে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের
সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা ও নির্বাহী সদস্য হযরত আলী গুরুতর আহত হন। তাদের
উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু বলেন,
‘আমাদের দুই নেতাকে অন্যায়ভাবে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার
ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে প্রশাসনের
পক্ষ থেকে দোষীদের তিনদিনের মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হয়। এ জন্য বেলা ১টার দিকে
কর্মবিরতি আপাতত তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর বগুড়া থেকে দেশের বিরুদ্ধে রুটে যানবাহন চলাচল
স্বাভাবিক হয়েছে।’
বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, ‘পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের
হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের দুজন নেতার ওপর
হামলায় জড়িত থাকায় মঙ্গলবার রাতেই রতন নামে এক নারিকেল ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার বিকাল পর্যন্ত হামলার ঘটনায় মামলা হয়নি।’