বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
-67d9a5c53a64a.jpg)
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের আগে মুহূর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
অন্য আহতরা হলেন- পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭) ও আব্দুল মমিন (৩৮)। আহত দুই পুলিশ সদস্য কাজী জাফর ও সুমন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে থানায় হামলা চালানো হয়। এ সময় দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্য বাধা দিলে তাদেরকে মেরে আহত করে ও থানা অবরুদ্ধ করে। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করে। সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।
রফিক নামে এক আহত বিএনপিকর্মী সাংবাদিকদের জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। এ সময় স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপিকর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থকে বিষয়টি জানায়।
পার্থ সেখানে উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। তাকে বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার ৪ আত্মীয়কে মেরে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ থানা থেকে তোফাজ্জলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।
থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা বাকি ৩ জনকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন থানায় আক্রমণ করে দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করে ও থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যেই অপরাধ করবে তার বিচার হবে।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।