বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গ্রাম পুলিশকে মারধরের অভিযোগ

ডামুড্যা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় গ্রাম পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগের জেরে তার ওপর ফের হামলা চালানো হয়েছে। অভিযোগ তুলে নিতে দেওয়া হচ্ছে হুমকি।
সোমবার উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের চর ভয়রা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজী মান্নান
বেপারির ছেলে শ্রমিক দল নেতা জুনায়েদ বেপারি (৫০), গোসাইরহাট উপজেলা আলাওলপুর ইউনিয়নের
আবুল হোসেন দর্জির ছেলে মাহামুদ দর্জি (৪৫) ও চর ভয়রা গ্রামের মৃত আবেদ আলি সরকারের
ছেলে নেওয়াজ সরকার (৩৫)।
থানায় অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মার্চ চর ভয়রা গ্রামের
জয়ন্তী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবরে অভিযান চালায় উপজেলা সহকারী কমিশনার
ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মালেক। ওই সময় সেখান থেকে একটি ট্রলার ও
ড্রেজার জব্দ করেন তিনি। জব্দকৃত মালামাল ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে দেখভালের দায়িত্বে
স্থানীয় গ্রাম পুলিশদের হেফাজতে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে চলে আসেন তিনি।
এরপর সেখানে আসেন জুনায়েদ বেপারির নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল আসে।
তারা প্রথমে মালামালগুলো জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ
আমীর হোসেন তাদের বাধা দেয়। তাকে মারধর করে মালামালগুলো নিয়ে যায় তারা। স্থানীয়রা আহত
গ্রাম পুলিশকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আহত আমীর
হোসেন বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলে থানায় দেওয়া অভিযোগ তুলে নিতে আমীর হোসেনকে
চাপ দিতে থাকে ওই বিএনপি নেতা। কাজ না হওয়ায় সোমবার রাতে গ্রাম পুলিশ আমীর হোসেনের
ওপর হামলা চালায় অভিযুক্তরা। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে
নেয় তারা।
আমীর হোসেন বলেন, ‘জব্দকৃত ট্রলার ও ড্রেজার আমার এবং গ্রাম পুলিশ সুলতান
বেপারির জিম্মাদারিতে রেখে উপজেলায় চলে যায় এসিল্যান্ড স্যার। তিনি যাওয়ার পরে জুনায়েদ
বেপারি, নেওয়াজ সরকার, মাহমুদ দর্জিসহ কয়েকজন এসে প্রথমে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে মালামালগুলো
ফেরত চাই। আমরা দিতে অষ্বীকৃতি জানালে আমাদের ওপর হামলা করে সেগুলো নিয়ে যায়। এ নিয়ে
থানায় অভিযোগ করি। এর জেরে সোমবার রাতে তারা আমাকে ফের মেরেছে। অভিযোগ তুলে নিতে প্রতিনিয়ত
হুমকি দিচ্ছে। আমি এ হামলার সঠিক বিচার দাবি করছি।’
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জুনায়েদ বেপারির বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া
যায়নি। কথা হয় আরেক অভিযুক্ত নেওয়াজ সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা
মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি তাদের মারধর করিনি। এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট।’
ডামুড্যা থানার ওসি হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো
হয়েছে। গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। আসামিদের ধরতে একাধিকবার অভিযান চালানে
হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’