মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে হাত ও পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ভোররাতে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নারী জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মৃত আলাই মোল্লার মেয়ে রুপালী খাতুন।
তিনি জানান, তিনি তার বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। তার দুটি প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে। কয়েক বছর আগে দয়ারামপুর গ্রামের সেকেনের ছেলে ইদ্রিসের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে ইদ্রিস তাকে বিয়ে করতে চায়। তিনি বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হলে ইদ্রিস গত ১ বছর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের পরেও ইদ্রিস তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করলে তিনি অসম্মতি জানান।
গত সোমবার ইদ্রিস মোবাইলে কল দিয়ে তার স্ত্রী বাড়িতে নাই উল্লেখ করে যেতে বললে তিনি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। সোমবার ভোরে তিনি ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হলে ইদ্রিস ও তার ভাই আসাদুল তাকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ইদ্রিসদের বাড়িতে নিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে।
নির্যাতনের দুই ঘণ্টা পর এলাকাবাসী, ইউপি সদস্য (মহিলা) ও গ্রামপুলিশ তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন। এ বিষয়ে তিনি থানায় এজাহার দিয়েছেন বলে রুপালী জানান।
অভিযুক্ত ইদ্রিস জানান, রুপালীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক বছর আগে তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি অন্যখানে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে রুপালী তাকে ফোন করে সম্পর্ক চালিয়ে যাবার প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হননি। গত কয়েক দিন আগে তাদের গরুর গোয়ালে কীটনাশক মাখা ঘাস দেখতে পান। কে বা কারা এই ঘাস রেখে যাচ্ছেন তার সন্ধান করতে গিয়ে গতকাল ভোররাতে রুপালীকে গোয়াল থেকে ধরে হাত-পা ও মুখ বেঁধে রাখেন। নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার জানান।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা ইউপি সদস্য আনেছা জানান, ফজরের নামাজ শেষে লোকজনের চিৎকার শুনে ইদ্রিসের বাড়ির উঠানে গিয়ে রুপালীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। সেই সময় তিনি গ্রামপুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
গ্রামপুলিশ নিমাই চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ইউপি থেকে ফোন পেয়ে ইদ্রিসের বাড়িতে গিয়ে রুপালী খাতুনকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলায়মান শেখ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং অভিযুক্ত ইদ্রিসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর এজাহার পেয়েছেন বলে জানান তিনি।