Logo
Logo
×

সারাদেশ

রোগীর মায়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে শিশু চুরি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৪২ পিএম

রোগীর মায়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে শিশু চুরি

রোগীর মায়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে মানিকগঞ্জ জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৯ বছর বয়সি এক শিশু চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায় বোরকা পরিহিত এক নারী। চুরির ঘটনায় হাসপাতালজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে ৩ ঘণ্টা পরে চুরি হওয়া শিশু লাইজুকে মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের সামনের এক পানের দোকানদার পেয়ে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেন।

রোববার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। শিশু চুরির ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।

উদ্ধার হওয়া লাইজু মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার দড়িকয়ড়া গ্রামের কৃষক কাইয়ুমের মেয়ে। লাইজু কয়ড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।

লাইজুর মা শিল্পী বেগম বলেন, আমার ছোট ছেলে অসুস্থ, সে কারণে গত ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছেলের পাশে আমি আর আমার মেয়ে লাইজু রয়েছি। রোববার সকালে এক মধ্যবয়সি মহিলা বেডের সামনে এসে আমার ও মেয়ের সঙ্গে কথার ছলে সখ্য গড়ে তুলেন। পাশের বেডে তার বাবা ভর্তি রয়েছেন বলেও জানায় অজ্ঞাত ওই মহিলাটি।

সকালে মেয়ের ক্ষুদা লাগায় কলা কেনার জন্য ছেলেকে বেডে রেখে বাইরে যেতে পারছিলাম না। ছোট মেয়েও কিনে আনতে পারবে না। এ নিয়ে মা মেয়ে কথা বলছিলাম। এমন সময় ওই বোরকা পরিহিত নারী বলেন- আমি কিনে এনে দিচ্ছি আপা। পরে রোগীর মা ওই নারীকে পাঁচশ টাকা দিয়ে কলা আর রুটি কিনে আনতে বলেন। তখন সে আমার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে আমিও নিয়ে যেতে দেই। যাওয়ার পর এক ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও তারা ফিরে না আসায় আমি পাশের বেডসহ হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে না পেয়ে আমার মেয়ে চুরি হয়ে গেছে বলে কাঁদতে থাকি। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন এগিয়ে এসে আমার কথা শুনে পুলিশকে খবর দেন।

সদর থানার এসআই দেব দুলাল বলেন, ঘটনটি শুনে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে- এমন সময় হাসপাতাল থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে জজ কোর্টের সামনের পান-বিড়ির দোকানদার হাবিবুর রহমান শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে শিশুটিকে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পান-বিড়ির দোকানদার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শিশুটিকে নিয়ে বেলা ১১টার দিকে বোরকা পরিহিত এক মহিলা আমার দোকানে আসেন।

তিনি বলেন, আমার মেয়েটিকে একটু দেইখেন, আমি রাস্তার ওপার থেকে মিষ্টি কিনে নিয়ে আসি। এই বলে চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেলেও মহিলাটি ফিরে না আসায় শিশুটিকে তোমার মা ফিরতে এত দেরি করছেন কেন! তখন শিশুটি বলে সে আমার মা নয়, কোনো স্বজনও নয়।  শিশুটিকে বাড়ির কথা বললে, শিশুটি বলে আমার ছোট ভাই হাসপাতালে ভর্তি; কিন্তু কোন হাসপাতালে ভর্তি সেই কথা বলতে পারে না। রাস্তার পাশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো দেখাতে দেখাতে শিশুটিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে এলে শিশুটি তার মাকে খুঁজে পায়।

হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুর রহমান জানান, এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমান-উল্লা বলেন, শিশু লাইজুকে এক দোকানদার উদ্ধার করে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। বোরকা পরিহিত মহিলাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

Jamuna Electronics

img img
Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম