উদ্ধারকৃত মাদক বিক্রির অভিযোগে ওসির বদলি

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
-67d58e2fc42e9.jpg)
পুলিশের উদ্ধার করা ৯৬ কেজি মাদক প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রাশাসনিক কারণ দেখিয়ে ডিবি পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান জানান, এ বিষয়ে মৌখিক একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান বলেন, এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাছাড়া আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?
জানা যায়, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত ৯৬ কেজি গাজা উদ্ধার করেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল গাফফার। ওই গাঁজা নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে অসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আইন অনুসারে জব্দ মালামাল জিডি মূলে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় বিচারক জব্ধ মাদক পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু নরসিংদী ডিবি পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকিরকে ম্যানেজ করে মাধবদী আলগী এলাকার মাদক কারবারি মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করেন।
প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও চিহ্নিত মাদক কারবারির কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি ধরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ ওঠে ওসি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
পরে সেই টাকা ডিবির ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ বণ্টন করে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য।
তবে আদালতের নথিতে দেখা যায়, জব্দকৃত ৯৬ কেজি মাদক ধ্বংস করা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, নরসিংদী ডিবি পুলিশের ওসির উদ্ধার হওয়া মাদক বিক্রি করে দেওয়ার স্বভাব পুরনো। এর আগেও ১৮শ টাকা প্রতি পিস হিসাবে প্রায় ৬শ বোতল ফেনসিডিল ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের কর্মকর্তা অলামত জব্দ করে তার তলিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে এবং কোর্ট তা রিসিভ করে ধ্বংস করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে নাকি করে নাই, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কি দায়-দায়িত্ব আছে? তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।
নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ডিবি ওসির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যা যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।