অনশনে কাজ না হওয়া আত্মহত্যার চেষ্টা নারীর

চরফ্যাশন প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ এএম

বেশ কয়েকদিন ধরে স্ত্রীর অধিকারের দাবি ও নিজের সন্তানকে ফিরে পেতে অনশন করছে এক প্রবাসী নারী। অনশন করে সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এ নারী। পরে তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয়। হাসপাতালে। বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন এ প্রবাসী নারী।
বৃহস্পতিবার ভোলার চলফ্যাশনের ওমরপুর ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের প্রবাসী
হাসান সাজীর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই বাড়িতে অনশন চালিয়ে
আসছিল ওই নারী।
ভুক্তভোগী নারীর নাম মিতু আক্তার। রাজধানী মোহাম্মদপুর এলাকায় তার বাড়ি।
কাজের জন্য সৌদি আরবে থাকেন তিনি। বর্তমানে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
মিতু আক্তার জানান, কয়েক বছর আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
সেই ঘরে তার দুই সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর জীবিকার তাগিদে তিনি সন্তানদের রেখে সৌদি
আরবে পাড়ি জমান। প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে ওমান প্রবাসী যুবক হাসানের সঙ্গে পরিচয় হয়।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
২০২১ সালে বাংলাদেশে ফিরে তারা দুজনে বিয়ে করে। এরপর দুই বছর তারা ঢাকায়
একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। এর মধ্যে তাদের ঘরের জন্ম নেয় একটি মেয়ে সন্তানের, যার নাম
রাখা হয় রোজা। সংসারের খরচ জোগাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনই ফের মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবে
পাড়ি জমান। দুজনই এক মালিকের কাছে চাকরি নেন।
প্রবাসী এ নারী আরও জানান, সৌদিতে থাকার সময় হাসান ফের পরকীয়ায় জড়িয়ে
পড়ে। একপর্যায়ে কৌশলে শিশু রোজাকে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির মাধ্যমে দেশে পাঠিয়ে দেন তিনি।
এরপর থেকে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। এর মধ্যে হাসান ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। মিতুর
আয়ের সব টাকা হাতিয়ে নিয়ে গোপনে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করেন। ছুটি শেষে ফের
তিনি সৌদিতে ফিরে যান। পরে পরকীয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়।
দাম্পত্য বিরোধ দেখে সৌদি মালিক তাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেন। পরে ঢাকায়
এসে হাসান রোজাকে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। গত তিন মাস যাবৎ মিতুর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ
করে না। পরে নিখোঁজ স্বামী ও সন্তানের খোঁজে হাসানের বাড়িতে অবস্থান নেন মিতু।
মিতু আক্তারের দাবি, স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পরপরই তাকে দেখতে
পেয়ে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা তাকে ফাঁকা ঘরে রেখে পলিয়ে যান। গত দুই সপ্তাহ
দরে ওই বাড়িতে অবস্থান করছে তিনি। মাঝে মধ্যে হাসানের মা রাহিমা বেগম বাড়ি ফিরে এসে
তার ওপর নির্যাতন চালাতো।
অভিযোগের বিষয়ে হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া
যায়নি।
অসুস্থ মিতুর সঙ্গে হাসপাতালে থাকা রহিমা বেগম বলেন, ‘হাসান ও ওই মেয়ে
বিয়ে করেছে কি না আমি জানি না। হাসান অনেকদিন ধরে বাড়িতে নেই।’
চরফ্যাশন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘মিতু
আক্তার নামের এক রোগী হাসপাতালে আসে। রোগীর শ্বশুর জানায়, মিতু ৯টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছে।
পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘বিষয়টি আমার
জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’