
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৩ এএম
‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট’ অ্যাপে ৮৭ লাখ টাকা প্রতারণার ঘটনায় রাজশাহীতে মামলা

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ পিএম

আরও পড়ুন
প্রতারকচক্রের তৈরি করা ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট নামক মোবাইল অ্যাপে বিনিয়োগের কথা বলে ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীতে মামলা হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বুধবার রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক মামলাটি চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর উপরভদ্রা এলাকায়। তার আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার মামলার আবেদন করার পর বৃহস্পতিবার আদালত মামলাটি চন্দ্রিমা থানার ওসিকে তদন্তের জন্য দিয়েছেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন-ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের বাংলাদেশ প্রধান সজীব কুমার ভৌমিক ওরফে মাহাদী হাসান (৩৩), কান্ট্রি লিডার মোতালেব হোসেন ভুঁইয়া (৩৫), রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), সোহাগের স্ত্রী ও রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমাতুজ জহুরা মিলি (৩২), রাজশাহীর এজেন্ট মিঠুন মণ্ডল (৩৬), ওয়াজেদ আলী খেবির (৬০), মোজাহার আলী (৫৫) ও মো. ওবাইদুল্লাহ (৪৩)।
আসামিদের মধ্যে সজীব কুমার ভৌমিকের বাড়ি নোয়াখালী, মোতালেবের বাড়ি লক্ষীপুর এবং ওবাইদুল্লাহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। বাকি আসামিদের বাড়ি রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায়।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম বিনিয়োগ করেছিলেন ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া মামলার সাক্ষী জাকির হোসেন ১২ লাখ, শারমীন সুলতানা ২০ লাখ, তাহেরুল ইসলাম ৬ লাখ, রাজীব সাহা ১৭ লাখ, আনোয়ার হোসেন ৮ লাখ ও আশরাফুল রহমান ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হাতিয়ে নেওয়া মোট টাকার পরিমাণ ৮৭ লাখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়, আসামিরা প্রতারক। তারা ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট নামের একটি মোবাইল অ্যাপে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এই অ্যাপে বিনিয়োগ করলে প্রতি এক লাখ টাকার জন্য মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে।
প্রতারকচক্র তাদের একটি সেমিনারে ডাকেন। মামলার বাদী ও সাক্ষীরা ওই সেমিনারে গেলে তাদের বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর তারা আসামিদের হাতে বিনিয়োগের টাকা তুলে দেন। তখন তারা মোবাইলে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট অ্যাপ চালু করে দেন, কিন্তু এতে কখনো কোনো মুনাফা আসেনি। কথা ছিল, যেকোনো সময় বিনিয়োগকারীরা মূল টাকা তুলে নিতে পারবেন, কিন্তু তারা সে টাকাও তুলতে পারেননি।
হঠাৎ গত ২১ ফেব্রুয়ারি আসামি ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ, ফাতেমাতুজ জহুরা মিলি, ওয়াজেদ আলী খেবির ও মিঠুন মণ্ডলের সঙ্গে বাদী সাইফুল ইসলামের দেখা হয়। এ সময় তিনি টাকা ফেরত চাইলে তারা তা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। ভবিষ্যতে টাকা চাইলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলেও তারা হুমকি দেন। ফলে তিনি এ মামলা করেন।
আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতে রাজশাহীর আদালতে এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছিল। এরমধ্যেই নতুন একটি মামলা হলো। আগামী ২৯ এপ্রিল এ মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ রয়েছে।